বাংলাপ্রেস ডেস্ক: অমর একুশে বইমেলার ৩য় দিনে নতুন বই এসেছে ৭৪টি। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় শুরু হয় বইমেলা। ছিল শিশুপ্রহরের আয়োজন। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিশতজন্মবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : মাইকেল মধুসূদন দত্ত শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিকউল্লাহ খান। আলোচনায় অংশ নেন খসরু পারভেজ এবং হোসনে আরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবু মুহম্মদ নূরুল হুদা।
অনুষ্ঠানে প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন-বিচার কেবল মননশীল সাহিত্য-সমালোচনার বিষয় নয়, সমগ্র ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্যক্তিসত্তা, সমাজসত্তা ও সৃষ্টিশীলতার জাগরণ এবং সাহিত্যের প্রায় সবগুলো রূপের উন্মেষ ও প্রতিষ্ঠার বহুমুখী পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সাফল্যের ইতিবৃত্ত। নাটক, আখ্যান-কাব্য, গীতিকবিতা, চতুর্দশপদী, পত্র-কাব্য, গ্রিক মহাকাব্যের গদ্যানুবাদ, ইংরেজি রচনা ও চিঠিপত্র মিলিয়ে তার সৃষ্টিশীল প্রতিভার প্রকাশরূপ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়িত হয়েছে। তার কিংবদন্তীতুল্য জীবন ও কর্মের সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত রূপ অঙ্কনের প্রয়াস আজও চলমান।
আলোচকরা বলেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন তাঁর যুগের থেকেও অগ্রসর। বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে তিনি এনেছিলেন আধুনিকতার যুগ। রামায়ণের কাহিনিকে অবলম্বন করে রাবণকে নতুনভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। চিরায়ত সাহিত্যের প্রতি তার বিশেষ অনুরাগ থাকলেও তার সাহিত্যে চিরায়ত ও রোমান্টিকতার সহাবস্থান লক্ষ করা যায়। মধুসূদনের ব্যক্তিজীবন ও সাহিত্যজীবনের পাশাপাশি তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়েও গভীরভাবে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বাংলা সাহিত্যের আদি আধুনিক কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি এমন একজন সৃষ্টিশীল সত্তা যিনি বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন, বিভিন্ন ভাষার মৌলিক সাহিত্য পাঠ করেছিলেন এবং নিজস্ব মৌলিকতা সৃষ্টি করেছিলেন। তার এই মৌলিকতাকেই আমরা বলি আধুনিকতা।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক সালেহা চৌধুরী, লালন গবেষক আবু ইসহাক হোসেন এবং কবি ও প্রাবন্ধিক মামুন মুস্তাফা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি নাসির আহমেদ, তারিক সুজাত, শাহনাজ মুন্নী এবং নাহার মনিকা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মিলন কান্তি দে, শাহাদাৎ হোসেন নিপু এবং আফরোজা কণা। এছাড়া ছিল ঝর্ণা আলমগীর-এর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং লক্ষ্মীকান্ত হাওলাদার-এর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শেখ রাসেল ললিতকলা একাডেমি’-এর পরিবেশনা।
আগামীকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ৪র্থ দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: কাঙাল হরিনাথ মজুমদার শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তপন মজুমদার আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন জাফর ওয়াজেদ এবং আমিনুর রহমান সুলতান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মুনতাসীর মামুন।
বিপি/টিআই