Home কলাম কানেকটিকাটে বাক-এর নিবন্ধন বাতিলের জন্য দায়ী কে?

কানেকটিকাটে বাক-এর নিবন্ধন বাতিলের জন্য দায়ী কে?

মতামত

by bnbanglapress
A+A-
Reset

বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের অবহেলার ফলেই নিবন্ধন বাতিলসহ চরম অধ:পতন ঘটেছে বলে মনে করছেন কানেটিকাটের প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি আমেরিকান মহিলা সিপিএ শ্রাবনী। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংগঠনটির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কি ভূমিকা আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে সিপিএ শ্রাবনী বলেন, বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশান অব কানেকটিকাট (বাক) এর নাম শুনে ২০১৮ সালে তিনি মশিউর রহমান কামালের সাথে যোগাযোগ করে কানেকটিকাটে আসেন। সংগঠন নয় বরং তার যাবতীয় প্রয়োজনে সবকিছুই একজন মানুষই দেখা শোনা করতেন। পরবর্তীতে কিছু ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সেই সময় প্রচন্ড কষ্টে ছিলেন শ্রাবনী। তাই এক কান দু কান করে তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলো অনেক বেশি জানাজানি হয়ে যায়, কিন্তু সমাধানের পথ বের করতে সামাজিক ভাবে কেউ কোনো সাহায্য করেননি। তার ব্যক্তিগত কষ্টগুলোকে উস্কে দিয়ে তিনি যেন একটি মানুষের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেন সে ব্যাপারে অনেকে শুধু পায়ে ধরা বাকি রেখেছিলো।
তিনি দীর্ঘ ২২ বছর আমেরিকায় থাকেন। এখানকার মূলধারায় লেখাপড়াও করেছেন। এই দেশের আইন কানুন বিষয়ে কারো কাছ থেকেই তার কোনো রকম জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল না। ঠিক যেমন করে তাকে উস্কে দেয়া হতো বলে মনে করেন। তার সম্পর্কে নানা রকম মিথ্যে নোংরা কথা বলে অপর পক্ষের মনেও সংশয় সৃষ্টি করা হতো। সংগঠনের নাম করে তার কাছের কোনো মানুষ সস্তা নাচ গান করা নারী-পুরুষ নিয়ে দিন রাত পরে থাকুক এটা তিনি চা্ন না, কিন্তু যে কোনো নারীর জন্যে এটা অনেক বড় সম্মানের যে তার সন্তান ভাই বাবা কিংবা স্বামী কল্যানমুলক কাজ দিয়ে সমাজের নেতৃত্ব দেবে এইগুলি তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা।
তার সম্পর্কে নানা রকম নোংরা কথা ছড়ানোর বিষয়টিকে তিনি তীব্র ভাবে প্রতিহত করেন। এ জন্যেই তিনি ক্রমওয়েল থানায় সম্মতিপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি নথিবদ্ধ করেন। কারো ক্ষতি করার জন্যে নয়, তার নিজের প্রতিরক্ষার জন্য।
তিনি এদেশে লেখাপড়া করেছেন। স্বামীর সংসার করা কোনো বিষয় ছিলোনা। তিনি পৃথিবীর অন্যতম জটিল একটি পেশায় নিয়োজিত। শুধুমাত্র অর্থ বিত্তের জন্যে কাউকে কেন চাইবে? নিউ ইয়র্ক এর নবীন প্রবীণ সাংবাদিকরা ভালো করেই জানেন নিজের রূপ গুণ প্রতিভা সব অগ্রাহ্য করে তিনি তার লেখাপড়া আর ক্যারিয়ারকেই সারাজীবন প্রাধান্য দিয়েছেন। মা এবং মাটির টানে নিজের কমিউনিটিতে বার বার ফিরে এসে শান্তি খুঁজে পান তিনি।তার অভিভাবক হয়ে যে মানুষটি তার হাত ধরতে চেয়েছিলেন পরে হয়তো তিনি পিছ পা হয়েছেন। পরিণতিতে তার দুঃখ-কষ্টকে বাড়িয়ে তুলতে ব্যক্তিগত বিষয়টিকে একটি সমস্যা হিসেবে বারবার ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশান অব কানেকটিকাট (বাক)এর ২০২১ সালের নির্বাচনে তাকে এ কে এম মিসবাহ, তার স্ত্রী, মীর আজম, আশফাক তরফদার, হারুন আহমেদ সবাই বারবার অনুরোধ করার পর স্টামফোর্ড ভোট কেন্দ্রে যান তিনি। সেখানে ছোট ভাই ইমরান রহিমসহ অনেকের সাথে কুশলাদি বিনিময় করছিলেন এক পর্যায়ে অন্য পক্ষের সকলে এসে ভিক্টরি বলে চিৎকার করতে থাকলে তার ছেলে ভয় পেয়ে যায়। এরমধ্যে মিসবাহও কেটে পরেন। তখন ইমরান রহিম তাকে গাড়িতে তুলে দেন, কিন্তু তার গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়। সে কারণেই সেখানে পুলিশ উপস্থিত হন।
এরপর তিনি স্বাভাবিকভাবে জীবনে মনোনিবেশ করেন। হাজার ধরণের রেস্টুরেন্ট খাবার দাবার মিউজিয়ামে তিনি ও ছেলে ঘুরে বেড়ান এভাবেই একদিন একটি রেস্টুরেন্টে সামান্য কিছু খাওয়া পিক করতে গেলে একজন নারীর চরম দুর্ব্যবহারে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তিনি।
কানাডায় জন্ম হওয়া আলট্রা মডার্ন বাবা এবং পাঞ্জাবি জ্ঞাতিগুষ্টির সাথে ফাইট করে যে ছেলেকে নিজের কাছে রেখেছেন সেই ছেলে যদি বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সামান্য নান রুটি খেতে গিয়ে অপদস্থ হয় তাহলে মা হিসেবে তিনি কি করবেন? তাই প্রতিবাদ স্বরূপ একটি রিস্ট্রেনিং অর্ডার নিয়ে তিনি মামলা প্রত্যাহার করেন। সেক্ষেত্রে ও তাকে এখানে যাবেনা, ওখানে যাবেনা ইত্যাদি আদেশ নির্দেশ দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়। এগুলো আদালত আমলেই নেয়নি।
আইনগত ভাবে কোনো সংগঠন বা কোথাও যেতে তার বাধা নেই। পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তিনি সবকিছু থেকে দূরে। স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছেন। তার ছেলে তিনি দেখাদেখি ইসলাম ধর্ম পালন করছে। তিনি প্রতি বছর টোকোন মুরাদের স্বদেশ গ্রোসারিতে একটি ছাগল কোরবানি দেন। একজন মুসলিম মা হিসেবে তার ছেলেকে সব রকম এবিউসের হাত থেকে সুরক্ষিত রেখে একটি সুন্দর পরিবেশ দেয়া তারই কর্তব্য বলে তিনি মনে করেন।
শ্রাবনীর এই জার্নিতে কানেকটিকাটের বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি মানুষেরও এক ফোঁটা অবদান নাই। মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার পরিবারের কারো সাথে তার যোগাযোগ নাই। তিনি নিজের মতো করে কানেকটিকাটে তার একটি ভুবন তৈরী করেছেন।
গত পাঁচ বছরে কানেকটিকাটের কোনো বাংলাদেশি পরিবার তার কিংবা তার ছেলের নূন্যতম খোঁজও রাখেনি। দুই একটি পরিবার আছে যারা তাকে মাঝে মধ্যে দাওয়াত করেন। তিনি তাদেরকে উপযুক্ত সম্মান করেন। আবার কিছু অপদার্থ লোকজন শুধুই নিয়ে গালগল্প করেন। একটি মানুষকে নিচে নামানোর অযথা চেষ্টা করেছেন। তাবাক মাসালা রেস্টুরেন্ট ওপেন হবার পর সেখানে একবার বাচ্চার জন্মদিন পালন করেন তিনি, কিন্তু সেখানেও ছিল নানা অব্যবস্থা।
বাক একটি সামাজিক সংগঠন। তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ একজন প্রফেশনাল। বাক এর সংবিধানটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে কোনো প্রফেশনাল এর পক্ষে কোনো মতামত দেয়া সম্ভব না। তবে বাক এর নির্বাচন ২০২১ এর সময় ও এই সংগঠনটির ৫০১সি এক্সেম্পট স্টেটাস ছিলোনা। সেটা জানার পরও ডক্টর তামিম যথেষ্ট শিক্ষিত হয়েও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনে যারা জিতেছেন তাদেরকে অভিবাদন জানিয়েছেন এবং পরবর্তীতে কোথাও কারো কোন উদ্যোগ দেখিনি।
বিভিন্ন মাধ্যমে যা দেখি তাতে করে মনে হয় বাক-এর লোগোকে জনগণের কাছে সুপরিচিত করার ক্ষেত্রে বাক এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও তার কমিটির যথেষ্ঠ ভূমিকা আছে সব কিছুই তো একা করা সম্ভব না। কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে বাক এর অন্যান্য সদ্যসরা তো কমিটিকে জানাতে পারে। তাছাড়া নতুন করে নিবন্ধন করার মানে এই নয় যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা হঠাৎ করে “নাই” হয়ে যাবেন আবার এটাও সত্য যে বাকের সদস্য হিসেবে আরো অনেকের অধিকার আছে সাংগঠনিক বিষয়ে মত প্রকাশের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মানুষকে ছোট করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিলে শুধু খেলা পাল্টা খেলা হবে। একটি সামাজিক সংগঠনের বর্তমান ভবিষৎ উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখার ন্যে সবাই মিলে বসে আলোচনা এবং সম্প্রীতির মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন শ্রাবনী।
বাক এর নতুন পুরাতন কোনো নিবন্ধনে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তার কোনো অভিশাপ দেয়ার ক্ষমতাও নেই। তিনি কারো কোনো ক্ষতি হোক তা চান না। সামাজিক ভাবে সবাই মিলেমিশে থাকুক এটাই তিনি আশা করেন। শ্রাবনীর জন্ম হয়েছিল চট্টগ্রামে, কিন্তু তিনি জীবনের একটি কঠিন সময়ে ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন কানেকটিকাটের মিডেলটাউনে। তিনি জীবনের ব্যাক্তিগত সমস্যাগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে সমাধানেরও চেষ্টা করছেন।

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী