বাংলাপ্রেস ডেস্ক: স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর স্বায়ত্তশাসন নিয়ে দ্বিমত করার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ড. মসিউর রহমান এসব কথা বলেন। বইটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের লেখা।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজের মান, দক্ষতা, গুণ কমবেশি আছে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। প্রশ্ন এসেছে বিদেশিদের কথা শুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যদি সেটা হয়, তবে সেটা দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়। এখনও যে আইন বিদ্যমান আছে তাতে স্বায়ত্তশাসন দেয়া আছে।
তিনি বলেন, ব্যাংক সংস্কার নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার খেয়াল করলে দেখবেন, বলা হয়েছে- অর্থ পাচারকারীদের কঠোর শাস্তি দেয়া, পাচার হওয়া টাকা ওই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুসারে রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেট যেটা রাখতে হয় সেটা নিশ্চিত করা।
আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদ সাংবিধানিক করার প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেছেন, গভর্নর পদে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া সমীচীন।
এ প্রসঙ্গে ড. মসিউর রহমান বলেন, এখানে দুটি বিষয় আছে- সাংবিধানিক মর্যাদা এবং পদের স্থায়ীত্বকরণ। সাংবিধানিক মর্যাদা দিলে যেটা আসা উচিত সেটা হলো- তার নিয়োগ ও কৈফিয়তের ওপর সংসদে একটা কর্তৃত্ব থাকতে হয়। না হলে সরকার যে লোককে গভর্নর পদে বসাবে তিনি সংসদে আস্থাভাজন না-ও হতে পারেন। আরেকটি বিষয় হলো এই পদে যদি স্থায়ীত্ব দিতে চাওয়া হয় তাহলে সেটা চুক্তিভিত্তিক হতে পারে। তবে যেটাই হোক না কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করার জন্য একজন গভর্নরের সাহসী ভূমিকা থাকা জরুরি।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শামস্ রহমান।
আলোচনায় আরও অংশ নেন অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, ইআরজির চেয়ারম্যান ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ।
বিপি/টিআই