Home বাংলাদেশ বিপদসীমার ওপরে তিস্তার পানি, খোলা হলো ৪৪ জলকপাট

বিপদসীমার ওপরে তিস্তার পানি, খোলা হলো ৪৪ জলকপাট

by বাংলাপ্রেস ডেস্ক
A+A-
Reset

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: উজানের ঢল আর তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪ জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা রক্ষায় জিওব‍্যাগসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, রংপুরে তিস্তার পানি কাউনিয়া ব‍্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ও ডালিয়া ব‍্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত রংপুরে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে হালকা থেকে মাঝারি, আবার কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণে দুই দিন ধরে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী চার দিন পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

ডুবছে সমতল তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

এদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অধ্যাপক ও নদী বিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বন্যার হাত থেকে রক্ষায়, তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া তিস্তা নদীকে বিজ্ঞান সম্মতভাবে খনন করে শাখা নদীগুলোর মুখ উন্মুক্ত করা দরকার।

তিস্তা পাড়ের সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উঠানে সিমেন্টের চুলারও অর্ধেক ডুবে গেছে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে। ভেতরে পানি না ঢোকায় সেখানেই লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না বসিয়েছেন রংপুরের গঙ্গাচড়ার দুলালি বেগম নামে এক নারী। আলাপে জানালেন শঙ্কার কথা। আরেকটু পানি বাড়লে হয়তো খাবার তৈরির উপায়ও আর তাদের থাকবে না।

জানা গেছে, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সব নদ-নদীতে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভাঙনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট। একইসঙ্গে ফসলি জমিতে পানি ওঠায় নষ্ট হচ্ছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল।

আরও জানা গেছে, রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তাতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি চরের বাসিন্দারা। ডুবে গেছে বোরো ফসলের খেত।

বিপি/টিআই

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী