আবু সাবেত: যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস) বিভাগের কাছে প্রায় ৭ লাখ অভিবাসীর ঠিকানা হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)।
তারা এদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করতে চায়। এই অনুরোধটি করদাতার গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে জানিয়েছেন আইআরএস।
দ্য মায়ামি হেরাল্ড-এর এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইআরএস কর্মকর্তারা এই ঠিকানা যাচাই করতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সাধারণত করদাতাদের তথ্য আইআরএস-এর মধ্যে কঠোরভাবে সংরক্ষিত হয় এবং অননুমোদিতভাবে প্রকাশ করা ফেডারেল আইনে নিষিদ্ধ। আইআরএস কর্মকর্তারা ডিএইচএস কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই করদাতার গোপনীয়তা সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলতে হবে।
অনেক অভিবাসী যারা আইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি নেই তারা প্রতিবছর ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেন। যার মাধ্যমে আইআরএস জানতে পারে তারা কোথায় থাকে, তাদের পরিবার, তাদের নিয়োগকর্তা এবং আয়ের পরিমাণ। যাদের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর নেই, তাদের জন্য আইআরএস ৯-অঙ্কের একটি পৃথক কোড দেয়, যাকে ইনডিভিজুয়াল ট্যাক্সপেয়ার আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (আইটিআইএন) বলা হয়। যা দিয়ে তারা ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করতে পারে।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস অনুসারে, এটি প্রথমবার নয়। এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসন এমনভাবে করদাতাদের তথ্য অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করেছে। যা নিয়ে কর সংস্থার কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন যে এটি ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করতে পারে। সম্প্রতি সংস্থাটি এলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডোজ)-এর একজন সদস্যকে নামবিহীন করদাতা ডেটা দেখার অনুমতি দিয়েছে, যা এজেন্সির সফটওয়্যার আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে করা হয়েছে। মাস্কের দল ফেডারেল প্রোগ্রাম সংকোচন এবং সরকারি কর্মী সংখ্যা কমানোর প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
একই সময়ে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ আগেও অভিবাসন ধরপাকড়ের অংশ হিসেবে আইআরএস এজেন্টদের সাহায্য চেয়েছিল। তারা এমন সংস্থাগুলোর অডিট করতে আইআরএস এজেন্টদের আহ্বান জানিয়েছিল যেগুলো সম্ভবত অভিবাসন অনুমতি ছাড়া অভিবাসীদের নিয়োগ করছিল। এই বিষয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস দেখানো একটি মেমোতেও উল্লেখ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনটি দেখায় যে ব্যাপক বহিষ্কারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ট্রাম্প প্রশাসন যেকোনো মাত্রায় যেতে প্রস্তুত।
গত সপ্তাহে, প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের জন্য একটি রেজিস্ট্রি তৈরি করা হবে এবং যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের তথ্য দেবে না তাদের জরিমানা বা মামলা হতে পারে এমনটাই জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির গত সপ্তাহের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে থাকা সবাইকে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে। আঙুলের ছাপ এবং ঠিকানা দিতে হবে। অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের একটি ধারা উল্লেখ করে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ন্যায্যতা দেওয়া হয়েছে যা ১৪ বছর এবং তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে একজন অভিবাসীর নিবন্ধনে ব্যর্থতা একটি অপরাধ, যার ফলে জরিমানা, কারাদণ্ড বা উভয়ই হতে পারে। দশকের পর দশক ধরে এই আইন উপেক্ষা করা হয়েছে-এখন আর তা হবে না।
বর্তমানে কতজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সরকারের কাছে নিজের পরিচয় এবং ঠিকানা জানাবে তা স্পষ্ট নয়। তবে নিবন্ধনে ব্যর্থতা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রশাসন জানিয়েছে যে, তাদের বহিষ্কারের প্রথম লক্ষ্য হবে সেই ব্যক্তিরা যারা যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ করেছে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম