Home আন্তর্জাতিক এবার শিক্ষা বিভাগের অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

এবার শিক্ষা বিভাগের অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

by bnbanglapress
Published: Updated:
A+A-
Reset

 

নোমান সাবিত: ফেডারেল সরকারকে সংকুচিত করার লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষা বিভাগের প্রায় অর্ধেক ছাঁটাই করার ঘোষণা করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১,৩১৫ জন কর্মীকে ছাঁটাইয়ের নোটিশ পাঠানো হয়েছে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে শিক্ষা বিভাগে ৪,০০০-এর বেশি কর্মী ছিল। তবে ইতোমধ্যেই শত শত কর্মী ছুটিতে ছিলেন বা পদত্যাগের বিনিময়ে আর্থিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। এই ছাঁটাইয়ের পর শিক্ষা বিভাগে মাত্র ২,১৮৩ জন কর্মী অবশিষ্ট থাকবে। ট্রাম্প বারবার পুরো বিভাগের বিলুপ্তির পক্ষে মত দিয়েছেন।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, এই ছাঁটাই শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা, ফেডারেল ছাত্র সহায়তার আবেদন (FAFSA), রাজ্যগুলোতে বরাদ্দকৃত তহবিল, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যক্রম, নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত তদন্ত বা কংগ্রেসের আইনি বাধ্যবাধকতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই ছাঁটাই মূলত এমন বিভাগগুলোর ওপর করা হয়েছে, যা অনুৎপাদনশীল বা অপ্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভাগের প্রতিটি অংশ কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হবে তবে মূলত এটি অভ্যন্তরীণ কাঠামোকে সহজ করার প্রচেষ্টা, বাইরের কার্যক্রমকে নয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন যে বিভিন্ন দপ্তরের জন্য ছয়টি পৃথক কৌশলগত যোগাযোগ দল ছিল, যা একত্রিত করা হবে।
এই ঘোষণার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কর্মীদের অফিস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তার কারণে বুধবার অফিস বন্ধ থাকবে।
কর্মকর্তা জানান, অবশিষ্ট কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ২১ মার্চের আগে তাদের ব্যক্তিগত জিনিস সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হবে।
শিক্ষা বিভাগ পুরোপুরি বিলুপ্ত করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যা ফিলিবাস্টার এড়াতে সিনেটে ৬০ ভোটের বাধা পেরোনোর দরকার হবে। তাই এটি সম্ভব না হলেও, প্রশাসন ও শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন বিভাগকে দুর্বল করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেদিন তিনি নিশ্চিত হন সেদিনই ম্যাকমাহন কর্মীদের একটি নির্দেশিকা পাঠান, সেখানে উল্লেখ করা হয় যে বিভাগে ব্যাপক ছাঁটাই ও পরিবর্তন আসছে।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে ও আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করে আমরা অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করব’। এখন বিতর্ক হতে পারে যে আদালত ঠিক কতটা ছোট করতে দেবে এই বিভাগকে, যাতে এটি কংগ্রেসের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন না করে।
কাটো ইনস্টিটিউটের এডুকেশন ফ্রিডম সেন্টারের পরিচালক নিল ম্যাকক্লাসকি আগে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট বাজেটের সীমার মধ্যে থেকে লোক নিয়োগ ও বরখাস্ত করার ক্ষমতা রাখেন। তিনি এমন কর্মী নিয়োগ দিতে পারেন না, যাদের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ নেই, তবে তিনি বরখাস্ত করতে পারেন এমনকি যদি তাদের বেতন দেওয়ার জন্য অর্থও থাকে। তবে যদি এত বেশি কর্মী বরখাস্ত করা হয় যে কংগ্রেসের নির্ধারিত কাজ সম্পাদন করা সম্ভব না হয়, তাহলে এটি সংবিধান লঙ্ঘন করবে’।
এদিকে, শিক্ষা বিভাগ রক্ষার জন্য মামলা ও নাগরিক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সমর্থকরা, যখন গুজব ছড়ায় যে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিভাগটি বিলুপ্তির নির্দেশ দিতে চলেছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি সেই পরিকল্পনা বাতিল করেন।
বাইডেন প্রশাসনের সাবেক শিক্ষা উপসচিব জুলি মার্গেটা মরগান বলেন,আমি মনে করি, যদি এজেন্সি বন্ধ বা ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং সেই চ্যালেঞ্জ সফল হবে’।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অজনপ্রিয়, এবং জনগণের উচিত তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করা, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং নীতিনির্ধারকদের জবাবদিহির মধ্যে রাখা।

[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী