বাংলাপ্রেস ডেস্ক: দেশে নতুন তিনটি স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম। ইতোমধ্যে ‘ফাইবার অ্যাট হোম’ কর্তৃপক্ষও দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
এর আগে শনিবার (১৯ এপ্রিল) ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেয় আইএসপি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন।
তবে নতুন করে ৩ স্তরে ইন্টারনেটের দাম কমছে জানিয়ে ফেসবুকে দেয়া পোস্টে উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন বা ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ইন্টারনেটের দাম কমছে। ‘ফাইবার অ্যাট হোমের’ ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এর আগে আইএসপি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে ৫ এমবির পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবি ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তারও আগে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সব আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে।’
এ নিয়ে ইন্টারনেট লাইসেন্স রেজিমের মোট তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী আরও লিখেছেন, বাকি আছে শুধুমাত্র মোবাইল সেবাদাতা ৩টি বেসরকারি কোম্পানির দাম কমানোর ঘোষণা। ইতোমধ্যে সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম (নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণ যন্ত্র- ডেন্স ওয়েভলেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) এবং ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে। এমতাবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, সরকার এমএনওগুলোকে (মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর) পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তরগুলোয় পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হবার পালা। মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও সামান্য কিছুটা কমে আসবে বলে আশা করি।
ফেসবুকে দেয়া ওই পোস্টের শেষদিকে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, ঈদুল ফিতরের দিন থেকে সরকারি মোবাইল কোম্পানি টেলিটক ১০ শতাংশ মূল্য ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছিল। সরকার আশা করে অতি দ্রুতই তিনটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর ঘোষণা দেবে। সরকার এখানে দুই ধরনের মূল্য ছাড়ের আশা করে- প্রথমত, মার্চ মাসে এসআরও এডজাস্টমেন্ট বাবদ মোবাইল কোম্পানিগুলো যে মূল্য বাড়িয়েছিল সেটা কমাবে। (সরকার শুল্ক বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে তা থেকে সরে এসেছে, কিন্তু সে মতে বর্ধিত মূল্য কমায়নি মোবাইল কোম্পানিগুলো।) এবং দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক গেটওয়ে বা আইটিসি, আইআইজি এবং ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যতটুকু পাইকারি দাম কমানো হয়েছে তার সমানুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমাবে।
পোস্টে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মানে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এমতাবস্থায় গ্রাহকস্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি/টিআই