ইমা এলিস: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই শুল্ক আরোপ করায় তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্যের একটি জোট মামলা করেছে। রাজ্যগুলো বলেছে, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট এই শুল্ক আরোপ করতে পারেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রদেশ অ্যারিজোনার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মেইস এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উন্মাদ শুল্ক পরিকল্পনা কেবল অর্থনৈতিকভাবে বেপরোয়া নয়, এটি অবৈধ।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই রাজ্যটি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন মিনেসোটা, নিউ ইয়র্ক, ওরেগন ও অন্যান্য রাজ্যের দায়ের করা মামলায় যোগ দিয়েছে। যদিও এক সপ্তাহ আগে পৃথকভাবে ক্যালিফোর্নিয়াও ট্রাম প্রশাসনের বিরুদ্ধে একই ধরনের একটি মামলা করে।
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর বিশ্ববাজারকে অস্থির করে তুলেছেন। তার অর্থনৈতিক ‘স্বাধীনতা দিবসের’ ঘোষণায় অসংখ্য দেশের বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প কয়েক দশকের মুক্ত বাণিজ্য নীতিকে উল্টে দিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের পাশাপাশি তিনি চীনের ওপরও অতিরিক্ত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর পাল্টা জবাবে বেইজিং মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ‘চীনের সাথে ন্যায্য চুক্তি’ করার জন্য কাজ করছেন। তবে ইতোমধ্যে তিনি অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন এবং আরো শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের হুমকি দিচ্ছেন।
বুধবার দায়ের করা মামলায় রাজ্যগুলো যুক্তি দিয়েছে, ১৯৭৭ সালে প্রণীত আইন ট্রাম্পকে শুল্ক আরোপের জন্য জরুরি ব্যবস্থা ব্যবহার করার অনুমতি দেয় না। এটি সাংবিধানিকভাবে কংগ্রেসের জন্য সংরক্ষিত।
মামলার অভিযোগ বলা হয়েছে, ‘যেকোনো কারণেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা তার সুবিধাজনক মনে হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী পণ্যের ওপর বিশাল ও সর্বদা পরিবর্তনশীল শুল্ক আরোপের কর্তৃত্ব দাবি করে প্রেসিডেন্ট সাংবিধানিক শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা এনেছেন।’
তবে ট্রাম্প বলেছেন, তার সুরক্ষাবাদী নীতি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খাতে কর্মসংস্থান ফিরিয়ে আনবে।
অন্যদিকে অ্যারিজোনার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মেইস বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউস যাই দাবি করুক না কেন, শুল্ক একটি কর এবং এই কর অ্যারিজোনার ভোক্তাদের ওপর চাপানো হবে।’
এদিকে বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্পের অনুমোদনের রেটিং তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম তিন মাসে ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। এই সপ্তাহে তা সর্বনিম্ন ৪৪ শতাংশে পৌঁছেছে। তার নীতিগুলো কিভাবে জনগণের ক্ষতি করছে তা তুলে ধরার জন্য ডেমোক্র্যাটরা এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেন।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম