মিনারা হেলেন: যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম জানিয়েছেন, এল সালভাদরের কুখ্যাত এক কারাগার থেকে কিলমার আব্রেগো গার্সিয়াকে যদি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো হয়, তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হবে।
২৯ বছর বয়সী আব্রেগো গার্সিয়া গত সাত সপ্তাহ ধরে তার নিজ দেশ এল সালভাদরে কারাবন্দি রয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন তাকে এমএস-১৩ গ্যাং সদস্য বলে অভিযোগ তুলে ভুলবশত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করে। মঙ্গলবার সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোম বলেন, গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানো সম্পূর্ণভাবে এল সালভাদরের ওপর নির্ভর করছে।
আব্রেগো গার্সিয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তিনি একজন এল সালভাদরের নাগরিক। তিনি নিজ দেশের মাটিতে অবস্থান করছেন। যদি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয়, তবে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই আবারও তাকে বহিষ্কার করব,” নোম বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের আওতাধীন নন, তিনি আমাদের নাগরিকও নন। তিনি নিজ দেশে, নিজ ঘরে রয়েছেন। এখন তার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা এল সালভাদরের উপর নির্ভর করে।
এদিকে, এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে জানিয়েছেন, তিনি আব্রেগো গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন না। তিনি বলেন, ‘একজন সন্ত্রাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে চোরাইপথে ফেরত পাঠানো অবাস্তব ও অযৌক্তিক।
আদালতের নথি অনুযায়ী, আব্রেগো গার্সিয়া প্রায় ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন, এসময় তিনি নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন এবং সেখানে তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, ২০১৯ সালে মেরিল্যান্ড পুলিশ তাকে এমএস-১৩ গ্যাং সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করার পরই তাকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও গার্সিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা কখনোই দায়ের হয়নি।
একজন মার্কিন অভিবাসন বিচারক পরবর্তীতে রায় দেন যে, গার্সিয়াকে বহিষ্কার না করা হোক, কারণ তার নিজের দেশে স্থানীয় গ্যাংদের হাতে নির্যাতনের আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন তার বহিষ্কারের ঘটনাকে “প্রশাসনিক ভুল” হিসেবে অভিহিত করলেও, তারা তাকে এমএস-১৩ সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা থেকে সরে আসেনি।
মার্কিন ফেডারেল বিচারক পাউলা জিনিস বুধবার পুনরায় ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, আব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে তারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে হবে।
মেরিল্যান্ডের এই বিচারক প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মে মাসের মধ্যে শপথনামা জমা দিতে, যাতে স্পষ্ট হয় তারা তাকে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে ৪ এপ্রিল আব্রেগো গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরপর ১০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টও রায় দেয় যে, তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম