ইমা এলিস: যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোম শুক্রবার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেড় লাখ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার ও নির্বাসিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এদের অনেকেই ধর্ষণ, খুন ও ডাকাতির মতো সহিংস অপরাধে যুক্ত ছিলেন।
নোম বলেন, ‘প্রতিদিন আমি এমন ব্যক্তিদের রিপোর্ট পাই, যাদের আমরা গ্রেপ্তার করে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছি—যারা আমাদের সমাজ ও পরিবারগুলোর জন্য হুমকি।’
তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এমন অপরাধীরা যেন আর যুক্তরাষ্ট্রে না থাকতে পারে, সে জন্য আমরা তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করি।’
তবে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা এই সংখ্যার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অভিবাসন আইনজীবী অ্যারন রিচলিন-মেলনিক বলেন, এই সংখ্যা ধরলে প্রতিদিন গড়ে ১,৬১৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে হতো, যা আইসিই’র পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর মতে, ‘এখানে কিছু একটা গড়বড় আছে।’
মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট (এমপিআই)-এর এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে আইসিই প্রতিদিন গড়ে ৩১০ জনকে গ্রেপ্তার করত, যা ২০২৫ সালের মার্চে বেড়ে দাঁড়ায় গড়ে ৬৫০ জনে। নোমের দাবিকৃত দেড় লাখ সংখ্যার পেছনে হয়তো সিবিপি ও আইসিই উভয়ের ডেটা একত্রে ধরা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সিবিপি’র তথ্যে অনেকেই রয়েছেন যাদের শুধু বর্ডার থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের প্রকৃতপক্ষে গ্রেপ্তার করা হয়নি—এই সংখ্যাটি প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই অভ্যন্তরীণ গ্রেপ্তার বাড়াতে তিনগুণ বেশি ২৮৭ ( জি) চুক্তি করেছে, যা স্থানীয় জেলখানা ও কারাগারে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। আরও ১০৭টি নতুন আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
এছাড়া, গির্জা, স্কুল ও হাসপাতালে অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের এখন সামনে এসে নাম নথিভুক্ত করতে ও বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, না হলে শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
এমপিআই জানিয়েছে, কংগ্রেস থেকে বাজেট অনুমোদন পেলে লেকেন রাইলি আইন সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হবে, যার অধীনে ছোটখাটো অপরাধে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীরাও গ্রেপ্তার হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রশাসন বছরে ১০ লক্ষ অভিবাসীকে নির্বাসিত করতে পারুক বা না পারুক, এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে ঐতিহাসিক প্রভাব ফেলবে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম