Home আন্তর্জাতিক টাফটস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রুমাইসা ওজতুর্ককে জামিনে মুক্তির আদেশ ভারমন্টের বিচারকের

টাফটস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রুমাইসা ওজতুর্ককে জামিনে মুক্তির আদেশ ভারমন্টের বিচারকের

by bnbanglapress
A+A-
Reset

 

মিনারা হেলেন: ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের টাফটস ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমাইসা ওজতুর্ককে জামিনে মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ভারমন্টের একজন বিচারক। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিচারক উইলিয়াম সেশনস তৃতীয় আটক রুমাইসার মুক্তির আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনি অন্তত দ্বিতীয় ব্যক্তি যাকে মুক্তি দেওয়া হলো।
বিচারক উইলিয়াম সেশনস তৃতীয় বলেন, লুইজিয়ানায় ওজতুর্ককে আটক রাখার জন্য সরকার কোনো পর্যাপ্ত প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। সরকারের একমাত্র প্রমাণ ছিল, তিনি ছাত্রদের একটি পত্রিকার জন্য লেখা এক প্রো-প্যালেস্টাইন মতামতমূলক প্রবন্ধে সহ-লেখক ছিলেন।
বিচারক বলেন, ‘তার আটকাবস্থা এই দেশে বসবাসরত কোটি কোটি অ-মার্কিন নাগরিকের বাকস্বাধীনতাকে ভীত করতে পারে। যেকোনো একজন এখন হয়তো তাদের প্রথম সংশোধনীর অধিকার প্রয়োগ করতে ভয় পাবে।’
তুরস্কের নাগরিক ওজতুর্ককে জামিন ছাড়াই মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। তাকে পরবর্তী আদালত শুনানিতে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এক সপ্তাহ আগে একই ধরনের আদেশে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র মোহসেন মাহদাবিকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ছাত্র ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ওজতুর্ক মার্চ মাসে ম্যাসাচুসেটসে রাস্তা থেকে গ্রেফতার হন, যা দেশজুড়ে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করে। তার আইনজীবীদের দাবি, মতামত লেখার প্রতিশোধ হিসেবেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে তিনি লুইজিয়ানার ডিটেনশন সেন্টার থেকে বের হয়ে আসেন বলে তার আইনজীবীরা জানান।
ট্রাম্প প্রশাসন কলেজ ক্যাম্পাসে কথিত ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ ও উগ্র মতাদর্শ রুখতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে এবং প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে কিছু শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।
শুক্রবার মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট জানায়, “আমরা আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন ও সাধারণ যুক্তি ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সরকার বলছে, শিক্ষার্থীদের লুইজিয়ানায় রাখা হয়েছে কারণ সেখানে জায়গা আছে। তবে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লুইজিয়ানার আদালত অভিবাসন বিষয়ে তুলনামূলকভাবে কঠোর রায় দেয়।
ওজতুর্কের আইনজীবীরা জানান, তিনি অ্যাজমার কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ছিলেন এবং অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়া জরুরি ছিল। আদালতে ওজতুর্ক জানান, তিনি বদ্ধ ঘরে থাকতেন, যেখানে বাতাস চলাচল ছিল না, এবং মার্চ থেকে অন্তত ১২ বার অ্যাজমার অ্যাটাক হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি সর্বদা এক ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থাকি।”
শুনানির সময়ও তিনি হঠাৎ অ্যাজমার অ্যাটাকে আক্রান্ত হন এবং কিছু সময়ের জন্য বাইরে যেতে বাধ্য হন। তিনি ডিটেনশন সেন্টার থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন এবং জানান সেখানে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।
বিচারক বলেন, “কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।” আদেশ জারির পর লুইজিয়ানায় তার পাশে থাকা আইনজীবী দাঁড়িয়ে তাকে আলিঙ্গন করেন।
এই রায়ের আগে, একটি ফেডারেল আপিল আদালত রায় দিয়েছিল যে, ট্রাম্প প্রশাসনকে ১৪ মে’র মধ্যে ওজতুর্ককে ভারমন্টে স্থানান্তর করতে হবে।
এছাড়াও শুক্রবার নিউ ইয়র্কের একটি আপিল আদালত সরকার পক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে, যেখানে ওজতুর্ক ও মাহদাবির মামলাকে একত্রে পরিচালনার অনুরোধ করা হয়েছিল। উভয় শিক্ষার্থীর আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন।
ওজতুর্কের ফেডারেল মামলা ভারমন্টে চলছে কারণ তাকে সেখানে ধরে রাখা হয়েছিল, যখন তার আইনজীবীরা মামলা দায়ের করেন। তাকে ম্যাসাচুসেটসে গ্রেফতার করে সংক্ষিপ্ত সময় নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ভারমন্টে নেওয়া হয়েছিল এবং পরে লুইজিয়ানায় পাঠানো হয়। তার একটি পৃথক অভিবাসন মামলাও লুইজিয়ানায় চলছে, যেখানে সরকার তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে চায়।
আদালতে ওজতুর্ক জানান, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ম্যাসাচুসেটসে ফিরে গিয়ে শিশুদের মিডিয়া নিয়ে একটি গ্রীষ্মকালীন কোর্স পড়াবেন। তার আগামী বছর পিএইচডি সম্পন্ন হওয়ার কথা।

[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

banglapress24

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

১১১ শেলডন রোড # ১৮৮৪, ম্যানচেস্টার, কানেকটিকাট ০৬০৪২

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৫ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী