বাংলাপ্রেস ডেস্ক: গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪,৯০০ জন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানায় শনিবার (৫ জুলাই), গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে।
জানা গেছে, মার্কিন ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত মানবিক সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মে মাসে গাজায় কার্যক্রম শুরু করা সংস্থাটি ইতোমধ্যে বহু সমালোচনার মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, জিএইচএফ-এর নিরাপত্তাকর্মী ও ইসরায়েলি বাহিনী ক্ষুধার্ত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি ও স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে।
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ বলেন, “এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ বহু হতাহতের তথ্য এখনো নথিভুক্ত হয়নি।” তিনি জানান, অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য সংকট চরমে উঠেছে, মানুষ পরিবারের জন্য খাবার জোগাড়ে মরিয়া হয়ে পড়েছে।
মাহমুদ বলেন, “অনেক মা তাদের সন্তানদের খাওয়াতে গিয়ে নিজেরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এমন মানবিক সংকটে মানুষ জীবন ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণ নিতে বাধ্য হচ্ছে।”
এদিকে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, জিএইচএফ-এর মার্কিন ঠিকাদারদের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে, তারা কখনও কখনও বেসামরিকদের ওপর ইচ্ছাকৃত গুলিবর্ষণ করেছে। যদিও জিএইচএফ এ ধরনের সব অভিযোগ “সম্পূর্ণ মিথ্যা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং নিজেদের নিরাপত্তা প্রক্রিয়াকে “অত্যন্ত সতর্ক” দাবি করেছে।
জিএইচএফের পক্ষ নিয়েছে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনও। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র দাবি করেন, “গাজায় একমাত্র কার্যকর সাহায্য সংস্থাই হলো জিএইচএফ।” জুনে সংস্থাটিকে ৩০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, জিএইচএফের কার্যক্রম ‘প্রাণঘাতী ও অমানবিক’। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একে “সশস্ত্র ত্রাণ প্রকল্প যা প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে” বলে বর্ণনা করে সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
একই দিনে, খান ইউনিসে এক বিতরণ কেন্দ্রের বাইরে গ্রেনেড হামলায় জিএইচএফের দুই মার্কিন কর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি/কেজে