বাংলাপ্রেস ঢাকা: অবশেষে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল গোটা বিশ্ব। দুই রাষ্ট্রনায়কের হুঙ্কার আর পরমাণু অস্ত্র প্রদর্শনের আস্ফালনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে উঠেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের ঐতিহাসিক বৈঠকে ট্রাম্প-কিম হাতে হাত রাখতেই সেই মেঘ কাটা শুরু হল। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত সম্মেলনে শান্তির পথে হাঁটারই সিদ্ধান্ত নিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
এ বলে আমার ব্রিফকেসে পরমাণু বোমার বোতাম আছে, তো ও বলে আমার টেবিলের তলায় আরও বড় বোমার বোতাম আছে। একজন তো ঘোষিত স্বেচ্ছাচারী, অন্যজন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলেও কম স্বেচ্ছাচারী নন। উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন যেমন বর্ণময় চরিত্র, বিশ্ব রাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পও তেমন রঙিন। দু’জনেই নিজের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে নারাজ। একরকম একগুঁয়েই বলা যায়। ফলে একে অপরকে চমকানোর পালা চলছিল বেশ কয়েক বছর ধরে। আর তাতে অশনি সংকেত দেখছিল গোটা বিশ্ব। যে কোনও মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধার সম্ভাবনাও বহুবার তৈরি হয়েছে। এরকম প্রেক্ষিতেই আচমকা পালাবদল। অস্ত্র ছেড়ে মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। গোটা বিশ্বে এ প্রায় চমকে দেওয়ার মতো বৈঠক। মঙ্গলবার ট্রাম্পের হাতে যখন কিম হাত রাখলেন, তখনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল অপারপর দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
তবে এখানেই শেষ নয়। আরও খুশির খবর শোনালেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানাচ্ছে, ট্রাম্প ও কিমের বেশ কয়েকটি নথিতে স্বাক্ষর করেন। যেখানে শান্তিরক্ষাই প্রধান কথা। যে চারটি বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন তাঁরা, সেগুলি হল,
১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়া নতুন করে নিজেদের সম্পর্ক গড়ে তুলবে। এবং তা রক্ষা করা হবে দুই দেশের মানুষের ইচ্ছে ও সমৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেই।
২। কোরিয় উপসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতাবস্থা রক্ষার ক্ষেত্রে দুই দেশ একে অন্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলবে।
৩। পানামজম চুক্তি মেনেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পথে হাঁটবে উত্তর কোরিয়া।
৪। ১৯৫৫-এর যুদ্ধে বন্দিদের হস্তান্তর বা মৃতদের দেহাবশেষ ফেরানোর ব্যাপারে এগিয়ে আসবে দুই দেশ।
মূলত এই চারটি ক্ষেত্রেই সহমত পোষণ করেন তাঁরা। কিছু নথিতে স্বাক্ষরও করেন। দু’জনেই বলছেন, বৈঠক ইতিবাচক। আপাতত শান্তির লক্ষ্যেই তাঁরা হাটছেন বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে সিঙ্গাপুর সামিট।