— ফারুক ওয়াহিদ
২০১১ সাল থেকে ২০১৯ অর্থাৎ মৃত্যুর দীর্ঘ আট বছর পর কর্তৃপক্ষ তথা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে- বীর মুক্তিযোদ্ধা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহান শিল্পী পপ সম্রাট আজম খানকে অবশেষে ২০১৯ সালে এসে একুশে পদকে ভূষিত করা হলো। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৯ সালের একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
একুশে পদক তুমি কার? এই পদকতো পপ সম্রাট আজম খান পাওয়ার কথা নয়- আজম খানতো পেয়ারে পাকিস্তান ভাংগার জন্য সরাসরি দায়ী- তিনিতো গিটার ছেড়ে জীবন বাজি রেখে অস্ত্র ধরেছিলেন হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ করেছেন ২ নং সেক্টরে- তাইতো এই মরণোত্তর সম্মাননা পদক পেতে তাঁর সময় লেগেছে দীর্ঘ আট আটটি বছর।
জীবদ্দশায় এই মহান শিল্পীকে আমরা সম্মান জানাতে পারলাম না- কী দরকার ছিল মৃত্যুর দীর্ঘ আট বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পীকে এই মরণোত্তর সম্মাননা পদক দেওয়ার?
২০১১ সালের ৫ জুন আজম খান মারা যান কিন্তু মারা যাওয়ার অনেক পূর্বেই মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে সারা বাংলায় সকল স্তর থেকে এই মহান শিল্পীকে একুশে পদক দেওয়ার বিষয়ে দাবি ওঠেছিল- কিন্তু কে শুনে কার কথা- তখন তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়নি- পুরস্কার দেওয়া হলো মৃত্যুর দীর্ঘ আট বছর পর- কারন তিনিতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা! বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যদি সবধরনের কোনো সম্মান দেওয়া হয় তা মুত্যুর পরই এবং এটাই এখন বাংলাদেশের অনির্ধারিত নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে- তাই পপ সম্রাট বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খানের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি- এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই।
এই মহান শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খান-তো মৃত্যুর আগেই বলে গেছেন-
“নেই কোন অভিযোগ/ জমে থাকা দুঃখ তিলে তিলে/ হয়েছে পাহাড় সমান।।
“নেই কোন অভিযোগ
জমে থাকা দুঃখ তিলে তিলে
হয়েছে পাহাড় সমান।।
নেই তবুও অভিমান
হৃদয়ের সুর ফেলে দিয়ে
সাজিয়েছিলাম কাছে টেনে
সব কিছু ভুলে হারালে তুমি
হলো প্রেমের অবসান।।
বিরহী সুর বুকে বাজে
পারি না তোমায় ভুলে যেতে।
নীরবে দুঃখ বয়েছে ফেলে
এই ছিল কী প্রতিদান।” গানটির শিল্পী: আজম খান; গীতিকার ও সুরকার: আশরাফ বাবু
ভিডিওতে শুনুন সেই গানটি-
https://youtu.be/OnB5PoYaQrQ
লেখক: ভারতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, ২ নং সেক্টর, বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া