বাংলাপ্রেস অনলাইন: অবৈধ অভিবাসী রুখতে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির তীব্র সমালোচনা করলেন নোবেলজয়ী শিশু অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই। ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নীতির কারণে পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়েছে ৩ হাজারেও বেশি শিশু। মালালা ট্রাম্পের এই নীতিকে নিষ্ঠুর-অমানবিক-অন্যায্য আখ্যা দিয়েছেন। কন্যা শিশুদের শিক্ষার অধিকারের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে পাকিস্তানে তালেবানের হামলার শিকার হয়েছিলেন শিক্ষা অধিকারকর্মী মালালা। মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসা মালালা নারী ও শিশুদের অধিকারের ব্যাপারে বরাবরই সোচ্চার। চলতি বছরের শুরুতেও একবার ট্রাম্পের নারীবিদ্বেষী অবস্থানের সমালোচনা করেছিলেন মালালা।
জিরো টলারেন্স নীতির আওতায় মেক্সিকোর অবৈধ অভিবাসন-প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে শক্ত আটক অভিযান পরিচালনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। আগে মেক্সিকো থেকে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার প্রবেশকারীদের মধ্যে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটনে আসছে বলে আলামত পাওয়া যেত, তাদেরই কেবল আটক করা হতো। পরিবর্তিত অভিবাসন নীতিতে যারাই অনিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমেরিকা প্রবেশের চেষ্টা করবে, তাদেরকেই আটক করা হচ্ছে। পরিবারের পূর্ণ বয়স্ক নারী-পুরুষ আটক হওয়ার কারণেই তাদের সুরক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই শিশুরা। সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে মার্কিন বিচারালয়। পরিবারবিচ্ছিন্ন শিশুদের অবিলম্বে বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আলাদতের পক্ষ থেকে।
মালালা ট্রাম্পের এই নীতির সমালোচনা করে বলেন, ‘এটা নিষ্ঠুর, এটা অন্যায্য, এটা একেবারেই অমানবিক। আমার মাথাতেই আসে না কী করে একজন মানুষ এমন করতে পারে’। মালালা আশা প্রকাশ করেন, বাচ্চারা শিগগির তাদের মা-বাবার সঙ্গে একত্রিত হবে। কন্যা শিশুদের শিক্ষা বিস্তার কর্মসূচির অংশ হিসেবে লাতিন আমেরিকা সফরে গেছেন মালালা। তার শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক চ্যারিটি ‘মালালা ফান্ড’র কার্যক্রম বিস্তৃত করতে তিনি ব্রাজিল দিয়ে এই সফর শুরু করেছেন। রিও ডি জেনিরোতে মালালা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন মালালা। বলেছিলেন, ‘নারীদের সঙ্গে কোনও নেতিবাচক আচরণ করার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন তার মা ও মেয়ের কথা চিন্তা করে।’
কিশোর বয়স থেকেই নারী শিক্ষা ও অধিকার আদায়ে আওয়াজ তুলেছেন মালালা। প্রায়ই টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারী শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে দেখা যেত তাকে। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর মালালার স্কুল বাসে উঠে পড়ে মুখোশধারী তালেবান সদস্যরা। নাম ধরেই খুঁজতে থাকে তাকে। সামনে আসার পর তাকে গুলি করে চলে যায় তারা। তৎক্ষণাৎ তাকে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক মাসের চেষ্টায় তার মাথার খুলি ঠিক করতে সক্ষম হয় ডাক্তাররা। এরপর থেকেই বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না মালালা। কিন্তু বিশ্বে নারী অধিকার আদায় আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেন তিনি। ২০১৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা।
ট্রাম্পের বর্তমান অভিবাসন নীতি অমানবিক: মালালা
282