বাংলাপ্রেস অনলাইন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য পূর্বশর্ত ঘোষণা করেছেন। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিনাশর্তে ইরানের সঙ্গে সংলাপে বসতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে ঘোষণা দেয়ার পর দুই ঘণ্টা যেতে না যেতেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী শর্তের কথা জানালেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন শেষ করার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা তিনটি শর্তে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। তিনি বলেন, তার ভাষায় ইরানের জনগণের সঙ্গে দেশটির সরকারের আচরণে পরিবর্তন আনা, মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে ইরানের নীতিতে পরিবর্তন আনা এবং পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধের পদক্ষেপ নিলেই কেবল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে প্রস্তুত রয়েছেন।
অথচ এর কিছুক্ষণ আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বিনাশর্তে তিনি ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। ‘যখনই ইরানিরা চাইবে তখনই এ আলোচনা হতে পারে’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “এটা আমেরিকার জন্য ভালো, তাদের (ইরানের) জন্য ভালো, আমাদের জন্য ভালো এবং গোটা বিশ্বের জন্য ভালো। কোনো পূর্বশর্ত নেই।”
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর বক্তব্য থেকে বোঝা যায় ইরানের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টেলিভিশনে ইরানের সঙ্গে কেবল লোক দেখানো আলোচনা চান যেমনটি তিনি উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সংলাপে বসার কথা বললেও বাস্তবতা হচ্ছে, মাইক পম্পেওর মতো কট্টর ইরান বিরোধীদের তিনি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা, ইরানি জাতিকে নিরস্ত্র করা এবং সর্বোপরি ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাত করা।
প্রকৃতপক্ষে, যেকোনো আলোচনার জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাস এবং এখানে হুমকির কোনো স্থান নেই। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসব নীতিমালার প্রতি মোটেই শ্রদ্ধাশীল নন। মার্কিন সরকার সবসময়ই কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ইরানকে সন্ত্রাসীদের সমর্থক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘনকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের জনগণকে সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ইরানের সঙ্গে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছেন।
বাংলাপ্রেস/আর এল