বাংলাপ্রেস অনলাইন: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনে ঢাকার আদালতে মামলার আবেদন করেছেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। তার আর্জি শুনে ঢাকার মহানগর হাকিম এ এইচ এম তোয়াহা অভিযোগটি সরাসরি মামলা আকারে গ্রহণ না করে তেজগাঁও থানা পুলিশকে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছেন এ বি সিদ্দিকী।
তার আরজিতে বলা হয়, গত ৪ অগাস্ট আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একটি অডিও ক্লিপ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যেখানে শোনা যায়, কুমিল্লায় অবস্থানরত নাওমি নামে এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। নাওমিকে তিনি বলছেন, ঢাকা এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে। অপরদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর হুকুমে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ছাত্রদলের লোকজন ঢুকে পরে। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় যেমন-জিগাতলায় ছাত্রদলের কর্মীরা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও বিভিন্ন জায়গায় পরিবহনে অগ্নিসংযোগ এবং ছাত্রী ধর্ষণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করে।
এ ছাড়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর ‘হুকুমে’ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘ছাত্রদলের কর্মীরা’ উত্তরায় এনা পরিবহনের দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ, জিগাতলায় আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর এবং হামলা করে কর্মীদের আহত করে, মিরপুরে মারপিট, হামলা ও গুলিবর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করেছেন সরকার সমর্থক সংগঠন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি।
আরজিতে তিনি বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে তারা এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। এর মাধ্যমে তারা ১৫৩, ১৫৩ (ক) ও ১০৯ ধারার অপরাধ করেছেন। ওই তিন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আবেদন করা হয়েছে আর্জিতে।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর রাজধানী অচল করে টানা আট দিন আন্দোলন চালায় শিক্ষার্থীরা। তাদের এই আন্দোলনের মধ্যে বাসভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে বিক্ষোভের মধ্যে শনিবার একটি অডিও রেকর্ড ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ফোনালাপে আন্দোলনে ‘মানুষ নামানোর’ কথা বলা হয়।
বলা হচ্ছে, ওই ফোনালাপের একপ্রান্তের কণ্ঠ বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর। অন্যপ্রান্তে ছিলেন নাওমি নামের আরেকজেন, যাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আমীর খসরুর দাবি, ওই অডিও ‘বানোয়াট’।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিতে ‘তৃতীয় পক্ষ’ নেমেছে। আর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘ভিন্ন খাতে প্রবাহিত’ করতে ‘যারা কলকাঠি’ নাড়ছেন, তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাপ্রেস/এফএস