বাংলাপ্রেস ডেস্ক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মারা গেছেন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮১ বছর বয়সে মারা যান মওদুদ। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়া ও বুকে ব্যথা অনুভব করায় গত বছরের ২৯শে ডিসেম্বর মওদুদকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। কিছুটা সুস্থ বোধ করায় ২০শে জানুয়ারি বাসায় ফেরেন তিনি। পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারি আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ১লা ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মওদুদ আহমদের।
দেশের রাজনীতির আলোচিত চরিত্র ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এই রাজনীতিবিদ সামরিক শাসক জিয়া-এরশাদের শাসনামলেও ছিলেন ক্ষমতাধর। আর মৃত্যু পর্যন্ত সম্পৃক্ত ছিলেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে।
ব্যারিস্টার মওদুদ বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদের শাসনামলে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এরশাদের আমলে প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিলো তাকে। বিএনপির আমলে ছিলেন আইন ও বিচারমন্ত্রী। নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মওদুদ আহমদ। সবশেষ তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে মওদুদ আহমদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। তিনি ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাক জেনারেল ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মওদুদ আহমদ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন আইনি লড়াইয়ে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন মওদুদ।
মওদুদ আহমদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে লন্ডনের লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সেখানে লন্ডনে পড়াশোনা করে দেশে ফিরে নিজেকে আইন পেশায় নিয়োজিত করেন।