Home প্রবাস নিউ ইয়র্কে ১৭টি পূজামন্ডপ ‘নিষ্প্রদীপ’

নিউ ইয়র্কে ১৭টি পূজামন্ডপ ‘নিষ্প্রদীপ’

by bnbanglapress

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ১৭টি পূজামন্ডপ ‘নিষ্প্রদীপ’ করে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রাদায়। বাংলাদেশের কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ, হাতিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে গত বুধবার হিন্দুদের ওপর ন্যাক্কারজনক আক্রমন, অসংখ্য প্রতিমা ভাংচুর, বাড়িঘর আক্রমন, হতাহতের প্রতিবাদে এবং অত্যাচারিত হিন্দুদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে নিউ ইয়র্কের ১৭টি পূজামন্ডপে এক্যবদ্ধভাবে রাত ১০টা থেকে ১০টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ‘নিষ্প্রদীপ’ (ব্ল্যাক-আউট) করে নীরবতা পালন করা হয়।
এতে অংশ নেওয়া মন্দির ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো মধ্যে রয়েছে তা হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ ভক্তসংঘ, বালকনাথ মন্দির, সেবা সংঘ, মহামায়া মন্দির, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির, গৌরনিতাই মন্দির, হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ আন্তর্জাতিক মতুয়া মন্দির ও মিশন, রাধামাধব মন্দির, ওঁম শক্তি মন্দির, দেবালয় মন্দির, উত্তর আমেরিকা হিন্দু কল্যাণ সংঘ, রাধামাধব মন্দির, সত্যনারায়ণ পূজা মণ্ডপ ও জামাইকা কালী মন্দির।
চলতি বছর নিউ ইয়র্কে ১৭টি পূজামণ্ডপে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। সোমবার (১১ অক্টোবর)শুরু হওয়া দুর্গাপূজা চলবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে মণ্ডপ সবার জন্য উন্মুক্ত হয় এবং বন্ধ হয় মধ্যরাতের পর। সর্বজনীন এই উৎসবে সব ধর্মের মানুষকে অংশ নিতে দেখা যায়।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের জামাইকায় বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মহামায়া মন্দিরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সশস্ত্র পুলিশ প্রহরায় চলছে দুর্গোৎসব। নেতৃত্বের কোন্দলে জড়ানো দু’গ্রুপের মধ্যে এক গ্রুপ তহবিল সংগ্রহের নাম করে গত বুধবার (৬ অক্টোবর) রাতে পূজার জন্য মন্দির সাজাতে গেলে অপর গ্রুপ বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। দুই কমিটির প্রধান শ্যামল চক্রবর্তী ও নির্মল পালকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেন। এ ঘটনায় জামাইকায় মহামায়া মন্দিরে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া শারদীয়া দুর্গাপূজায় চলছে সশস্ত্র পুলিশি পাহারা। নিউ ইয়র্কে এই প্রথম কোন মন্দিরে সশস্ত্র পুলিশ প্রহরায় দুর্গোৎসব চলছে বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিউ ইয়র্কের জামাইকার মহামায়া মন্দিরের নেতৃত্ব নিয়ে নানা ধরনের টানাপোড়ন চলছিলো। গত এক বছর ধরে দু’টি কমিটি গঠন করা হলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত থেকে একটি কমিটি শনিবার এবং অপর কমিটি রবিবার পূজা-অর্চনা করার অনুমতি পায়। এভাবেই চলছিলো মহামায়া মন্দিরের কর্মকান্ড। গত সপ্তাহে তহবিল সংগ্রহের জন্য ৫দিন মন্দির ব্যবহার করার আদেশ পান শ্যামল চক্রবর্তীর গ্রুপ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পূজার জন্য মন্দির সাজাতে শুরু করেন তারা। খবর পেয়ে ছুটে আসেন নির্মল গ্রুপের লোকজন। প্রথমে বাক-বিতন্ডা শুরু হলে উভয়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন উভয় গ্রুপ। শ্যামল চক্রবর্তী একজনের ওপর চড়াও হলে তাকে বাধা দেন নির্মল পাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্যামল চক্রবর্তী তার প্রতিদ্বন্দি নির্মল পালের ওপর শারীরিকভাবে হামলা চালায় বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ এলে শ্যামল চক্রবর্তী পুলিশকে জানান, তার ওপরও নির্মল পাল হামলা করেছে। রাত সাড়ে ১০টার ঘটনাস্থলে এসে উভয় দলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ দু’গ্রুপের প্রধান শ্যামল চক্রবর্তী ও নির্মল পালকে গ্রেপ্তার করে জামাইকা পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যান। সেখানে নির্মল পাল অসুস্থ হলে তাকে জামাইকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপর আসামী শ্যামল চক্রবর্তীকে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ভোর ৩টার দিকে জামিনে মুক্তি দেন।
এ ঘটনায় জামাইকা এলাকার প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া মহামায়া মন্দিরে পুলিশি পাহারায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয়া দুর্গাপূজা। ফলে মন্দিরে পুজারি ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যান্য আরও ১৬টি পুজামন্ডপে জমজমাট দুর্গোৎসব চলছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খব্র পাওয়া যায়নি।

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী