বাংলাপ্রেস ডেস্ক: সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝুলছে তালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অফিস, সেমিনার কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগারের তালাও খুলছে না। বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিও। গত ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতির কর্মসূচিতে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল হয়ে পড়েছে। প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল, সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করে আসছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরাও একই কর্মসূচি পালন করছেন। সবমিলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে। টানা ১০ দিন আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাসও পাননি শিক্ষক নেতারা। ফলে সচল হয়নি ক্যাম্পাস, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টানা গত ১০ দিন ধরে কোনো ক্লাস-পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, প্রত্যাশা করছি খুব শিগগিরই আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির ব্যাপারে সরকারপক্ষ আলোচনায় বসবে। আমরা এই অপেক্ষাতেই আছি। তবে শিক্ষকদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না বলে জানান এ শিক্ষক নেতা। প্রতিদিনের মতো গতকালও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়েছে। ফের কবে এ বৈঠক হতে পারে এ ব্যাপারেও কোনো আভাস পাননি শিক্ষক নেতারা। দিনের পর দিন কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় ক্যাম্পাস সহসাই সচল হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টানা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বড় শেসনজটের শঙ্কায় রয়েছেন। ক্লাস-পরীক্ষাসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা হতাশায় ভুগছেন।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলের দাবিতে শহীদ মিনার চত্বর থেকে একটি মৌন মিছিল বের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। জাবি অফিসার সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান বাবুল বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অতীত থেকে একটা পেনশন স্কিমের অধীনে আছি। নতুন করে আমাদের ওপর প্রত্যয় স্কিম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ স্কিম মানি না। একই দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, যতদিন পর্যন্ত এ বৈষম্যমূলকের অবসান না হবে, ততদিন শিক্ষকরা ক্লাসরুমে ফিরবে না। গতকাল সকাল থেকে দাফতরিক কার্যক্রম বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছেন।
বিপি/টিআই