বাংলাপ্রেস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করছে ইরান। এক্ষেত্রে তেহেরান শক্ত একটি কূটনৈতিক বার্তা দিয়েছে। যেখানে ইসরালের বিরুদ্ধে হামলায় আরও অধিক শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। ইরানী এবং আরব কর্মকর্তারা বিষয়টি সামনে এনেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেখার বিষয় ইরানের হুমকি বাস্তবায়ন হবে নাকি আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। গত ২৬ অক্টোবর ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তবে এ হামলা অনেকটা ঠেকিয়ে দিয়েছে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এখন এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তেহেরান।
ইরান যদি ইসরায়েলে হামলা চালায় তাহলে তের আবিবও বসে থাকবে না। তারাও তাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তেহেরানে হামলা করবে। তবে এক্ষেত্রে হামলায় কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করবে সেটি নির্ভর করবে মূলত ইরানের হামলার ধরনের ওপর। ইসরায়েলি কর্মকর্তার বলেছেন, তারা এখন পর্যন্ত তেহেরানের জ্বালানি এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়নি। এখন ইরান হামলা চালালে ইসরায়েল হয়তো তেহেরানের এসব স্থাপনার হামলা চালাবে।
আবর কূটনীতিকদের ইরান জানিয়েছে, এবারের হামলায় ইরান সেনাবাহিনী অংশ নেবে। কারণ ইসরায়েলি বিমান হামলায় দেশটি চারজন সেনা হারিয়েছে এবং বেসামরিক লোকও মারা গেছে। তবে সেনাবাহিনীর অংশ নেয়ার অর্থ এই নয় যে সৈন্য মোতায়েন করা হবে। এক্ষেত্রে আধা সামরিক বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সঙ্গে তারা কাজ করবে। কারণ এই বাহিনী ইসরায়েলি নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করে।
ইরানের হামলার বিষয়ে অবগত রয়েছে মিশরও। দেশটির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইরান আরও শক্তিশালী এবং ভয়াবহভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে চায়।
ইরানের কর্মকর্তা বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী তাদের সদস্য হারিয়েছে। সুতরাং তারা এর প্রতিক্রিয়া জানাবে। এক্ষেত্রে ইরাকের মাটি ব্যবহার করে ইসরায়েলি স্থাপনার হামলা চালানো হবে এবং এটি হবে আগের তুলনায় আরও ভয়াবহ।
ইসরায়েলের হামলার চালানোর ক্ষেত্রে ইরান শুধু ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আগের দুটি হামলাতে ইরানে এগুলো ব্যবহার করে। তবে এবারের হামলায় আরও অধিক শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ইরান ও আরব কর্মকর্তারা। গত ১ অক্টোবর ইরায়েলের হামলায় চার ধরনের মিডিয়ার রেঞ্জের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরান।
তবে এই মুহূর্তে হামলা চালাতে চায় না ইরান। কারণ হামলার মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায় না। জানুয়ারিতে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের আগেই ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা ভাবছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, ইরান ট্রাম্পের চেয়ে কমলা হ্যারিসকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপযোগী মনে করে।
মিশর, বাহরাইন ও ওমানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের কূটনীতিকরা যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় পক্ষ থেকে সতর্কতার পরও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড গত সপ্তাহে বলেন, ইরান যদি ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলা চালায় তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। সুতরাং আমরা চাই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা এখানে শেষ হওয়া উচিত।
বিপি/টিআই