বাংলাপ্রেস ডেস্ক: দ্যা গড অব স্মল থিংস বইয়ের নামের সঙ্গে যে নামটি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত সে নাম অরুন্ধতী রায়। ভারতের এই প্রখ্যাত লেখিকা বর্তমানে ঢাকায়। স্বাভাবিকভাবেই তার লেখার ভক্তদের আগ্রহ সীমাহীন তাকে ঘিরে। তাই নতুন করে বাংলাদেশের সংস্কৃতিমনা মানুষের মধ্যে আলোচনার অন্যতম বিষয় অরুন্ধতী রায়। তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব দ্য আটমোস্ট হ্যাপিনেস’ প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। এই উপন্যাসটিও পাঠক মনে ঝড় তোলে।
অরুন্ধতী রায় শুধু একজন লেখক নন তিনি সামাজিক অ্যাক্টিভিস্টও। তার পুরো নাম সুজান্না অরুন্ধতী রায়। ১৯৬১ সালের ২৪ নভেম্বর আসামের শিলংয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা রঞ্জিত রায় ছিলেন বাঙালি হিন্দু এবং মা সিরিয়ান খ্রিস্টান ম্যারি রায় নারী অধিকার কর্মী ছিলেন। কেরালার আয়মানাম এলাকায় শৈশবকাল অতিক্রান্ত করেন অরুন্ধতী রায়। দ্যা গড অব স্মল থিংস বইটিতে মূলত অরুন্ধতীর ছোটবেলার গল্পগুলোই তুলে ধরা হয়েছে। এসেছে অনেক ছোট ছোট স্মৃতিকথা। শুধু লেখালেখির জগতেই নয়, সিনেমার জগতেও খানিকটা পরিচিত মুখই অরুন্ধতী রায়।
অরুন্ধতী তার কর্মজীবনের প্রথম দিকে, টেলিভিশন এবং চলচিত্রের জন্য কাজ করেছেন। তিনি ১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া ইলেকট্রিক মুন এবং ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ইন হুইচ অ্যানি গিভস ইট দোস ওয়ান্স-এর জন্য চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। দ্বিতীয়টি স্থাপত্যবিদ্যার ছাত্রী হিসাবে তার অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র, যেখানে তিনি একজন অভিনেত্রী হিসেবেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রের জন্য সেরা চিত্রনাট্যকার হিসেবে ন্যাশনাল ফিল্ম এ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেন তিনি।
দ্যা গড অব স্মল থিংস বইটির জন্য তিনি বুকার পুরস্কারও অর্জন করেন। ২০০৪ সালে সিডনী পিস প্রাইজও অর্জন করেছিলেন তিনি। অবদমিত মানুষদের জন্য খোলাখুলি কথা বলার জন্য ২০০২ সালে লান্নান কালচারার ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেন তিনি। ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব লেটার্সের পক্ষ থেকে ২০০৬ সালে পান সাহিত্য একাডেমি অ্যাওয়ার্ড। পরবর্তী সময়ে ভারতে সামাজিক ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে নিজের এই পুরস্কার ফিরিয়ে দেন তিনি
বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশগত আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকেন অরুন্ধতী রায়। মানুষকে নাড়া দেয়ার বা মানুষের ভাবা দরকার এমন সব বিষয় নিয়ে বরাবর কথা বলে এসেছেন তিনি। বিশ্বায়ন বিরুদ্ধ বা বিশ্বায়নের বিকল্প আন্দোলন নিয়েও বরাবর কথা বলে এসেছেন তিনি। সমালোচনা তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি নিয়েও। পরমাণু চুক্তি ও শিল্পায়ন নিয়ে ভারতের নীতি নিয়েও বরাবর সমালোচনা তুলেছেন এই লেখিকা। শুধু ভারতের নয় শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নীতিমালা সম্পর্কেও অনেক কিছু লিখেছেন অরুন্ধতী রায়। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কথা বলেও প্রবলভাবে সমালোচিত হয়েছেন অরুন্ধতী রায়। বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম যখন কারাবন্দী ছিলেন তখনও তাকে মুক্ত করার কথা বলে অন্যান্য লেখকদের সঙ্গে বিবৃতি প্রকাশ করেন অরুন্ধতী রায়। এসব মিলিয়েই সবার কাছে প্রবলভাবে আলোচিত এই লেখিকা। সূত্রঃ চ্যানেল আই
বিপি/আর এল