— এবিএম সালেহ উদ্দীন
সন্ধ্যার পিছনের
ওই চাঁদ আবার ফিরে আসে
ফাঁকি দিয়ে লক্ষতারা।
জ্যোৎস্না প্লাবিত ছায়ায় ছায়ায়
কেউ যেন নিথর চোখে
স্মৃতির পাথর সাজায়।
আঁধার তিমিরে পাগলা ঘুমকে দূরে ঠেলে দিয়ে
তাই তো এই বিমূঢ় জাগরণ..
উঠোনে মাটির চাদরে
সাজানো স্বপ্নের ঘর
আমাদের সোনার সংসার।
ওর বাবা তো চলে গেছে সেই কবে
মুক্তির কথা বলে।
সেই যে গেল…
আর ফিরে এলো না।
দিন যায় রাত আসে
রাত্রির ভিতরে মিলে যায় রাত্রির অন্ধকার।
চোখের পর্দা সরে না–
চোখের পাতা নড়ে না।
রেল লাইনের হুইসেলে..
মাঝে মাঝে উঠে দাঁড়াই।
মনের মাঝে প্রশ্নের মরিচিকা
ওটা কি কৃষ্ণচূড়োর রাত ছিল
ফুল-ফাগুনের একুশ ছিল
নাকি ওটা ছিল
দু:খিনী বাংলার বর্ণমালা(?)..
এলোমেলো প্রশ্নের তাড়িত আঁধারে
নেমে আসে বিষাদ ছায়া।
ক্লান্ত পথিকের মতো
পথহারা পাখির মতো
নিশ্চল জেগে থাকি।
এদিক ওদিক ফিরে তাকাই!
হতবিহ্বল ভয়ার্ত মানুষের মতো
নাফ নদীর রক্তের মতো
ডুবন্ত মা ও শিশুর মতো
সেই কবে
আমিও যে ডুবে গেছি নিস্তব্ধ আঁধারে
তেমনই স্মৃতির জলাঙ্গে
ভেসে যাওয়া রক্তাক্ষরের পুষ্প-পলাশ
মিশে যায় নীল লোহিত সাগরে
যেমন
বাহিত হ্রদের ঘোলাজলও
মিশে যায় হাসান গন্জের
খাল-বিল , নদী-নালায়।
মেঘলা আকাশের নিচে
রক্তে মেশানো তেতুলিয়ার জলে স্মৃতি ভাসে।
ভাসে রক্তাক্ত ফেব্রুয়ারি!
একাত্তুরের কালো পঁচিশ,ইথার বার্তার ছাব্বিশে মার্চ রক্তঝরা নয় মাস-ষোলই ডিসেম্বর।
পঁচাত্তরের রক্তাক্ত স্মৃতি
কেবলই নিয়ে যায় পেছনের দিকে ..
যদিও এখনও থামে না
অতীত শকুনের হিংস্রতা ! তবু
একটি আশ্চর্য রাত দ্যুতিময় হয়ে
জ্বালিয়ে দেয় স্বপ্নের অগ্নি শিখা..
আর সেই সাথে আমিও
তৃষ্ণার্ত পাখির মতো চেয়ে থাকি ..
অনন্ত আকাশের দিকে ।
হৃদয়ের চারিধারে উড়ে আসে
অনাদৃত স্বপ্নের মৃত ডানা।
এভাবেই
ফিরে আসে স্মৃতি
ফিরে আসে অতীত।
শুধু
আসে না ফিরে সে..
আসে না আমার ছোট্ট খোকা।