সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে জেলার কমলনগর উপজেলার মতির হাট লঞ্চ ঘাট এলাকায় মেঘনা নদীর কূলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
শিশুদের মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশুদের বাবার অপেক্ষা আছে। স্ত্রী শাহেনা বেগম ও দুই শিশু। তাই ছোট ছেলে-মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে আছেন স্ত্রী। স্বামী লিটন আসলে এখান থেকে তারা চলে যাবে মজু চৌধুরী হাট। কথা বলার কিছুক্ষণ পর (স্বামী) লিটন চলে আসেন।
স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বাড়ী বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। তাদের পেশা নদীতে মাছ শিকার করা। ঝড়-বৃষ্টি, শীত সবকিছুর সঙ্গে মোকাবিলা করে নদীতে তাদের বসবাস। এখানেই খুঁজে পান সুখ-শান্তি।
স্ত্রী শাহেনা বেগম বলেন- শীতের ভারি তেমন ভালো কাপড়চোপড় নেই। নদীতে অনেক শীত পড়ে। তবুও নদীতে থাকতে হয়। ছোট-ছোট ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নদীতে তাদের বসবাস। কষ্ট হলেও থাকতে হয়,কিছুই করার নেই। কারন এটাই আমাদের জীবন। কিছুক্ষণ এখান থেকে চলে যাবো। আমার (স্বামী) লিটন মাঠ-ঘাটে মাছ বিক্রি করতে গেছে। তিনি আসলে চলে যাবো মজু চৌধুরী ফেরি ঘাট।
স্বামী লিটন জানান, প্রচুর ঠান্ডা পড়ে। এরপরও নদীতেই আমাদের থাকতে হয়। ছোট-বেলা আমি (লিটন) নদীতে বড় হয়েছি। মাছ ধরা শিখছি। এখন মাছ ধরাই আমার পেশা। আমাদের বাপ-দাদার পেশা ছিল মাছ ধরা। নদীতে এখন কম মাছ পাওয়া যায়। তাই গত কয়েকদিন ধরে মতির হাট থেকে মজু চৌধুরী হাট পর্যন্ত। মেঘনা নদীতে ছোট-ছোট মাছ ধরে জীবিকা-নির্বাহ করি। রাতে মজু চৌধুরী ফেরি ঘাট এলাকায় নৌকায় থাকি। নৌকার চারদিকে প্লাস্টিকের কাপড় মুড়িয়ে দিই, তখন শীত একটু কম লাগে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে থাকি নৌকায়।
আক্ষেপ-প্রকাশ করে স্বামী-স্ত্রী জানান, চারদিকে অনেকেই এ শীতে কম্বল বিতরণ করে। বিভিন্ন সময় সাহায্য-সহয়তা করে। কিন্তু এ দম্পতি সবকিছু থেকে বঞ্চিত। কারন তারা বরিশাল জেলার বাসিন্দা। এখানে কেউ কিছু বিতরণ করলে বলে তোমরা (স্বামী-স্ত্রী) অন্য জেলার বাসিন্দা।
বিপি/টিআই