সুলতানা মাসুমা,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদরে চন্দ্রগঞ্জ হযরত দেওয়ান শাহ্ দরবার শরীফ মেলায় মাত্র ২শ’ ফুটের মধ্যে ১১টি জুয়ার আসর বসেছে। বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ রয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন! এতে সচেতন মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে রোববার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত উপজেলার রামচন্দ্র পুর গ্রামে দেওয়ান শাহ্ মেলায় গিয়ে চোখে পড়ে ১১টি জুয়ার আসর।
মেলায় জুয়ার আসরগুলো বসেছে দেওয়ান শাহ্ দরবার শরীফের উত্তর পাশে। এর পাশে গানের তালে-তালে চলছে অশ্লীল নৃত্য। যার ফলে কিশোর-যুবকরা পড়ালেখা বন্ধ করে এসে মেলায় আড্ডা দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, দেওয়ান শাহ্ দরবার শরীফ একটি ঐতিহ্যবাহী মাজার। বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়।
জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে দেওয়ান শাহ্ (হুজুরের) সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিগত মেলাগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়নি। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাদের কারণে এসব কার্যকলাপ হচ্ছে। যার ফলে আমরা প্রতিবাদ করতে পারছি না।
আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছি, দ্রুত মেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য বন্ধ করার জন্য। আর এ জুয়ার আসর বসিয়েছে মাছ জাহাঙ্গীর। তিনি চন্দ্রগঞ্জ থানার শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক।
উল্লেখ্য, ১৮ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার অমিত কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ১৯ থেকে ২৩ জানুয়ারি পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলার অনুমতি দেন। রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলার কথা থাকলেও গভীররাত পর্যন্ত চলে এ মেলা।
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, মেলা চলুক। কিন্তু যারা এ মেলার নামে জুয়ার আসর বসিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
দেওয়ান শাহ্ দরবার শরীফ মেলা কমিটির প্রধান হিসাব রক্ষক ও চন্দ্রগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু বলেন, এ মেলায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনুমতি পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। জুয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবলু বিষয়টি এড়িয়ে যান।
মেলায় জুয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ জানান, মেলা হচ্ছে আমাদের একটি সংস্কৃতি। জুয়া খেলা সম্পন্ন একটি বেআইনি ও অপরাধ। আমরা দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান ও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমানকে মুঠোফোন একাধিকবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিপি/টিআই