বাংলাপ্রেস ডেস্ক: উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলাকে সবজির ভান্ডার বলা হয়ে থাকে। নওগাঁ জেলা তার মধ্যে অন্যতম। এই জেলায় বেগুন, পটল, সিম, আলু, শসা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি বছরজুড়েই চাষ হয়ে থাকে। যেগুলো দিয়ে একদিকে যেমন দেশের সবজি চাহিদা পূরণ হয়; অন্যদিকে কৃষকরাও সচ্ছল হন আর্থিকভাবে। এবার সেই সবজি তালিকায় যুক্ত হয়েছে রঙ্গিন ফুলকপি।
নওগাঁ ও এর আশপাশের বহু মাঠেই এবার রঙ্গিন ফুলকপির চাষ হয়েছে। সাধারণত সাদা ফুলকপির চেয়ে সহজ চাষ পদ্ধতি ও কম খরচের কারণেই জনপ্রিয় হচ্ছে এসব কপি। হলুদ, বেগুনি ও লাল রঙ্গের এসব কপির তুলনামূলক চাহিদাও রয়েছে অনেক বেশি। কেউ নতুন বলেই আগ্রহভরে কিনছেন আবার কেউ পুষ্টিগুণ বিবেচনায় কিনে খাচ্ছেন এসব ফুলকপি। তাই অনেক ক্ষেত্রেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মাঠ থেকেই।
সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের কৃষক জালাল হোসেন এবার প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন রঙ্গিন ফুলকপি। প্রায় ১২ শতক জমিতে হলুদ ও বেগুনি রঙ্গের কয়েকশ গাছ লাগিয়েছিলেন। ফলনও হয়েছে বেশ।
জালাল বলেন, এসব কপির সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে সার, সেচ ও কীটনাশক তুলনামূলক অনেক কম দরকার হয়। সাধারণত সাদা ফুলকপিতে যা অনেক বেশি প্রয়োজন হয়।
তিনি বলেন, নিজে চাষবাস করতে পারলে বড় অঙ্কে লাভবান হওয়া সম্ভব। মৌসুমে শুরুতেই একটি কপি বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা পর্যন্ত। এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যদিও খুচরা বাজারে এসব কপির দাম আরও বেশি।
বদলগাছী উপজেলার চাষি হাসমত বলেন, গত প্রায় ২ বছর ধরেই তিনি এই ফুলকপি চাষ করছেন। গত বছর কিছুটা কম লাভবান হলেও এবার বেশ ভালই লাভবান হচ্ছেন তিনি। যদিও এ মৌসুমে কুয়াশার ব্যাপকতায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। তবে সবমিলিয়ে পুশিয়ে নিতে পেরেছেন এবার।
কৃষি বিভাগ বলেছে, শুধুমাত্র নওগাঁতেই নয়। আশপাশের জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও নাটোরসহ বৃহত্তর উত্তরাঞ্চলেই রঙ্গিন ফুলকপিতে আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, অন্য কপির চেয়ে রঙ্গিন ফুলকপির স্বাদ অনেক বেশি। আর নতুন হওয়ায় ভোক্তার কাছে চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আর তাই বাজারজাতের ঝামেলা কম। কেবল নওগাঁ জেলার অন্তত ১৯ জন চাষি এবার রঙ্গিন ফুলকপি চাষ করেছেন। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশা করেন তিনি।
বিপি/টিআই