বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীতে তরুণ বিপ্লবীদের আঁকা গ্রাফিতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অন্যান্য উপদেষ্টাসহ সরকারি কর্মকর্তারা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেয়ালে আঁকা এসব গ্রাফিতি ঘুরে দেখেন তারা। এমন কিছু ছবি ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টার পেজে পোস্ট করা হয়।
‘ঢাকাডায়রি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে ফেসবুক পোস্টে ছবির ক্যাপশন ছিল, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই-আগস্টের ছাত্র-অভ্যুত্থানের সময় তরুণ বিপ্লবীদের আঁকা গ্রাফিতি দেখতে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম প্রমুখ।
গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন তা দমনে প্রথমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে মাঠে নামানো হয়। এরপর শেখ হাসিনার সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে। এ কারণে ওই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটে।
এই অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তার সরকারের অনেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। এ সরকার এমন একটা সময়ে ক্ষমতায় এসেছে যখন দীর্ঘ স্বৈরশাসনে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় লুটপাটে বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতিও। ভেঙে পড়া সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার ও অর্থনীতিকে চাঙা করতে দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে।
দায়িত্বগ্রহণের দুই মাস শেষ হয়েছে এই সরকারের। এর মধ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে তারা। জাতিসংঘ অধিবেশনে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জো বাইডেনসহ বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে আশার আলো দেখাচ্ছেন তিনি।
সেই আন্দোলনে সরকারের হিসাব মতে, অনেক শিশু-কিশোরসহ ৭৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির তথ্য মতে, আন্দোলনে শহীদের সংখ্যা এক হাজার ৪২৩ জনের বেশি।
এ ছাড়া সরকারের হিসাবে, আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন।
বিপি/কেজে