রমজান আলী টুটুল,সৈয়দপুর (নীলফামারী )প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ‘ঢাকা কাচ্চি ডাইন’ নামে একটি রেষ্টুরেন্টের খাবার খেয়ে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিরিয়ানিত রক্ত মাখা কাঁচা মাংস থাকায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে দাবি শিশুর অভিভাবকের।
অসুস্থ শিশুটির পিতা সোহাগ হোসেন বলেন, বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ৩ টায় শহরের পাঁচমাথা মোড় এলাকায় ঢাকা কাচ্চি ডাইনে মেয়ে ও স্ত্রী কে নিয়ে লান্স করার জন্য যাই। আমার জন্য খাসির বিরানী, মেয়ের জন্য মুরগীর বিরানী আর স্ত্রীর জন্য হাসের বিরিয়ানি অর্ডার করি।
খাওয়ার মাঝামাঝি সময়ে দেখতে পাই মেয়ের প্লেটের বিরিয়ানির মাঝে মুরগীর মাংসের সাথে টাটকা রক্তমাখা। ভালোভাবে নেড়ে দেখি মাংসের ভিতরে আরও তাজা রক্ত। বিষয়টি তাৎক্ষণিক দায়িত্বরত ম্যানেজার সজিব কে দেখাই।
এতে তিনি বলেন, ওগুলো মাংসের নয়, হাড়ের ভিতরের। সমস্যা নাই পাল্টিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু এ অবস্থায় মেয়ের খাওয়ার অরুচি হওয়ায় সে আর খায়নি। আমরাও কোনরকমে খাওয়া শেষ করি।
এসময় রক্তমাখা কাচা মাংসের ছবি মোবাইলে নেয়ায় সজিব ক্ষেপে যায় এবং বিল ভাউচার দিতে গড়িমসি করে।
এরপর বাসায় এসে মেয়ে কয়েকবার বমি করেছে এবং রাতেও কিছু খেতে পারেনি। এব্যাপারে পরদিন সাংবাদিকদের সহ গিয়ে রেস্টুরেন্টের মালিককে বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু তিনি দোষ স্বীকার না করে উল্টো এমন কিছু ঘটেনি বলে সাফ জানান। বাধ্য হয়ে ভোক্তা অধিকারে অনলাইনে অভিযোগ করেছি।
ঢাকা বিরিয়ানি ও ঢাকা কাচ্চি ডাইনের মালিক জালাল উদ্দীন বলেন, এগুলো রক্ত নয়, হাড়ের ভিতরের রস। অনেক সময় রান্নায় পরিপূর্ণ আঁচ না পাওয়ার কারণে হাড়ের ভিতরের রস জ্বাল হয়না। সেটাই বের হয়েছে। এতে খাবার নষ্ট হওয়ার কিছু ঘটেনি।
তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে এই খাবার খেয়ে শিশু অসুস্থ হয়েছে। তাই তার চিকিৎসা খরচ বাবদ ৩ হাজার টাকা দিতে চাই। কিন্তু সেই টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানান ভুক্তভোগী শিশুর পিতা।
সূত্রে জানা যায় , হাতিখানা ও গোয়ালপাড়া এলাকায় তাদের রন্ধন শালা রয়েছে । সেখান থেকেই তিনটি দোকানে ওইসব খাবার সরবরাহ করা হয় । একই ধরনের খাবার তিনটি দোকানের চটকদারি নাম দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে । এই চটকদারি বিজ্ঞাপন দেখেই ভোজন প্রিয় মানুষ খাবারের স্বাদ ভিন্ন মনে করে একেক সময় একেক দোকানে খাবার খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে ।
সূত্রটি আরো জানায় , সেখানে খাসির নামে বুড়ো বকরির গোস্ত , অসুস্থ ও মরা মুরগির রান্না করে বিক্রি হচ্ছে । সেনেটারি ইন্সপেক্টেরের পরিচয়ে আলতাব নামের এক ব্যক্তির সাথে জালাল উদ্দিনের সখ্যতা থাকার কারণে নির্ভয়ে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে চলেছে ।
নীলফামারী জেলা ভোক্তা অধিকারের উপ-পরিচালক সামসুল আলম বলেন, উল্লেখিত ঘটনা জেনেছি এবং একটি অভিযোগও পেয়েছি। আমরা এর আলোকে অভিযান চালিয়ে সত্যতা নিশ্চিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
বিপি/কেজে