Home বাংলাদেশ নিলামে উঠছে সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল ৫২ গাড়ি

নিলামে উঠছে সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল ৫২ গাড়ি

by বাংলাপ্রেস ডেস্ক
A+A-
Reset

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও দ্রুততম সময়ে সংসদ ভেঙে দেয়ায় শুল্কছাড়ে অর্ডার করা গাড়ি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে কয়েকজন সাবেক এমপির। সাবেক হওয়ার কারণে শুল্কছাড় না মেলায় অর্ডার করা বিলাসবহুল গাড়িগুলো মালিকানায় নিচ্ছেন না এই সংসদ সদস্যরা। ফলে নিলামে উঠতে যাচ্ছে সাবেক সাংসদদের ৫২টি গাড়ি।

এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে- মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, জাগোয়ার, টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, রেঞ্জ রোভার, মিতসুবিশি, ফোর্ড, লেক্সাস ব্র্যান্ডের গাড়ি। গত ১৫ বছরে ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা মূল্যের দামি গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় এনেছেন এমপিরা।

কাস্টমস সূত্র বলছে, শুল্কছাড়ে অর্ডার করলেও সাবেক এমপিদের এসব গাড়ি নিতে হলে এখন ৮৫০ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। সেই সঙ্গে পূরণ করতে হবে কাস্টমসের শর্তাবলি। তবে সাবেক এমপিদের অনেকেই পলাতক থাকায় গাড়িগুলো তাদের নেয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই গাড়ি বন্দরে আসার ৩০ দিন অতিবাহিত হতেই সেগুলো নিলামে তুলছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ মাসের মধ্যেই নিলামের তারিখ চূড়ান্ত হবে।

এরই মধ্যে দুই দফায় ২৪ জন এমপিকে শর্ত মেনে গাড়ি খালাস করতে নোটিশ দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এটি নিয়ম রক্ষার নোটিশ। মূলত নিলামেই উঠবে সব গাড়ি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, বিলাসবহুল এসব গাড়ির শুল্কসহ প্রতিটির বাজারমূল্য ৮ থেকে ১২ কোটি টাকা। গাড়িগুলোর ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার সিসি। স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের গাড়ির ওপর ৮৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এমপিরা এসব গাড়িতে পেতেন শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা। এখন সংসদ না থাকায় তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাবেন না।

তাহলে নোটিশ পাঠালেন কেন– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্দরে গাড়ি আমদানির পর ৩০ দিন পার হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর নিলামের জন্য কাগজপত্র আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। ওই কাগজপত্রে ছাড় না করা গাড়িগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। এরপর আমরা আমদানিকারক বরাবর একটি নোটিশ ইস্যু করি। নোটিশে বলা থাকে নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে গাড়ি ছাড় করার জন্য। ইতোমধ্যে এমপি বা তাদের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে নোটিশ পৌঁছানো হয়েছে। তবে এখানে অনেক শর্ত যুক্ত আছে। যেগুলো আসলে পূরণ করতে পারবেন না সাবেক এমপিরা। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, নিলাম কার্যক্রম তদারকি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আমরা নিলামযোগ্য পণ্যের তালিকা তাদের দিই। ৫২টি গাড়ির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে যেগুলো ৩০ দিন আগে আমদানি হয়েছে, সেগুলোর তালিকা দিয়েছি আমরা কাস্টমসকে।

যেসব এমপিদের কপাল পুড়ল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সাবেক এমপি এসএম আল মামুন, বাঁশখালীর মুজিবুর রহমান, খুলনার এস এম কামাল হোসেন, নওগাঁর সুরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, গাইবান্ধার শাহ সরোয়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসএকে একরামুজ্জামান, নেত্রকোনার সাজ্জাদুল হাসান, ঝিনাইদহের নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, যশোরের তৌহিদুজ্জামান, সুনামগঞ্জের মুহাম্মদ সাদিক, ময়মনসিংহের আবদুল ওয়াহেদ, জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান মঞ্জু, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী, মহিলা এমপি তারানা হালিম প্রমুখ।

অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন যারা

ছাত্র আন্দোলনের পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে গত জুলাইয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, অভিনেতা ফেরদৌস, ব্যারিস্টার সুমনসহ তৎকালীন সাত সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম থেকে তাদের গাড়ি ছাড় করে নেন। সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী এবং মুজিবুর রহমান মঞ্জু সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও গাড়ি খালাস করতে পারেননি। এ ছাড়া অনুপম শাহজাহান জয় ও এবিএম আনিসুজ্জামান নামে আরও দুই সাবেক এমপি গাড়ি ছাড় করতে নথিপত্র জমা দিয়েছিলেন। এই চারটি গাড়িও এখন কাস্টমসের জিম্মায়।

বিপি/টিআই

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী