বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেছেন, জ্বালানি সংকটে অনেক কারখানা রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ব্যবসা টিকাতে পারছি না। আমাদের গ্যাস দেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা দেব।
তিনি বলেন, ডিজেল দিয়ে উৎপাদন চালু রাখা সম্ভব না। সরকার যদি শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ায়, তাহলে কর্মসংস্থান বাড়াবে, রাজস্ব আয় বাড়বে। প্রয়োজনে একবেলা খাবার রান্না করে তিনবেলা গরম করে খাব।
শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ‘দেশের শিল্প খাতে জ্বালানি–সংকট সমাধানের পথ’ শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন শেখ বশিরউদ্দীন। এ ছাড়া বিভিন্ন শিল্প খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা ও প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এ. কে. আজাদ বলেন, কিছুদিন আগে এক ব্যবসায়ী তার ছেলের সঙ্গে এসেছিলেন। উনি তার টেক্সটাইল কারখানা আংশিক বন্ধ করে দিয়েছেন। মাগরিব নামাজের সময় আমার ডান পাশে ছিলেন। সিজদায় গিয়ে হু হু করে কান্না। উনি আসলে গ্যাসের চাপ পাচ্ছিলেন না। কারখানা চালতে না পেরে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংকের টাকা দিতে পারছেন না। নরসিংদী এলাকায় অনেক কারখানা রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে জ্বালানি সংকটে। আবার আমরা অনেকে কারখানা চালাতে পারছি না। কারণ যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে তাদের শ্রমিকেরা এসে ভাঙচুর করছে, চাকরি চায়। আমরা তাদের কীভাবে চাকরি দেব, আমরাই তো কারখানা চালাতে পারছি না।
তিনি বলেন, জ্বালানি উপদেষ্টার (শেখ বশিরউদ্দীন) কাছে কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম। উনি ব্যাপার টা বোঝেন, তিনি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখন একটু ভালো অবস্থায়, তবে এভাবে গ্যাস পেলে উৎপাদন চালিয়ে নিতে পারব, কিন্তু টিকে থাকতে পারব না। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানির দাম বাড়ছে, শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে না। কারণ পাকিস্তান কম দামে পণ্য দিতে পারছে। আমাদের রপ্তানি যেখানে নেতিবাচক সেখানে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ভালো।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি বলেন, ভারতের ৬টা প্রদেশে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- শ্রমিকদের বেতনে ভর্তুকি,বিনামূল্যে জমি, বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে ভর্তুকি। ফলে বিনিয়োগকারীরা সেখানে ছুটছে। আমরা ব্যবসা টিকাতে পারছি না। আমাদের গ্যাস দেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা দেব। আমি যুক্তরাষ্ট্রের কটন সামিট থেকে ফিরলাম। সেখানে একজন অর্থনীতিবিদ দেখালেন চীনের ওপর যেভাবে কর আরোপ করা হচ্ছে তাতে আমদানিকারকরা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম এসব দেশে আসছে। কিন্তু আমরা অর্ডারগুলো সেভাবে নিতে পারছি না। কারণ যেগুলো অর্ডার নেওয়া আছে সেগুলোই সময় মতো অর্ডার সরবরাহ করতে পারছি না।
বিপি/টিআই