বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ‘পতিত স্বৈরাচার পেছন থেকে আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে’ অভিযোগ করে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের চারদিকের অবস্থা দেখে অনেকে একটু আতঙ্কিত হচ্ছেন, একটু উদ্বিগ্ন হচ্ছেন… এগুলো কী হচ্ছে?’
গত দু ইদিনে রাজধানীতে সহিংস ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান।
হোটেল লেকশোরে ‘তারেক রহমান: পলিটিক্স অ্যান্ড পলিসিস কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের এই প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের ‘উড ব্রিজ’। অনুষ্ঠানস্থলে গ্রন্থটি এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ৫৭১ পৃষ্ঠার গ্রন্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন-কর্ম-রাজনীতির নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসলে আপনাদের বুঝতে হবে… আমাদের সেই শত্রুরা যারা সামনে থেকে চলে গেছে… পেছনে থেকে তারা দেশকে আবারও অস্থির করে তুলছে। এখানে আমাদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, আমাদের দেশের মানুষেরা কেন জানি না সহনশীলতার অভাব হয়ে গেছে। একটু ধর্য ধরতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, এই সরকার ফেল করলে অভ্যুত্থান ফেল করে যাবে, বিপ্লব ফেল করে যাবে… আমরা আবারেও সেই অন্ধকারে চলে যাবো।
‘সুতরাং, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমার মনে হয় আপনাদের পজিটিভ চিন্তা করা প্রয়োজন।’
‘তারেক রহমান: জীবন্ত ইতিহাস’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি প্রায় সবসময় এই কথাটা বলি যে, ইচ্ছা করলেই, চেষ্টা করলেই কাউকে ম্লান করে দেওয়া যায় না, উড়িয়ে দেওয়া যায় না… ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। কিউবার ফিদেল কাস্ট্রো তিনি যুদ্ধ করতেন প্রথম দিকে… সেই যুদ্ধের সময়ে তিনি বাতিস্তার হাতে গ্রেফতার হলেন… গ্রেফতারের পরে তার বিচার হলো সেখানে ১২ বছর সাজা হয়েছিল। সেই সময়ে কাস্ট্রো বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, কনডেম মি ডাজেন্ট মেটার… হিস্ট্রি উইল এবজোরড মি… আমাকে তোমরা এখন কনডেম করতে পারো, কিন্তু ইতিহাস আমাকে ধারণ করবে।
ফখরুল বলেন, সেই ইতিহাস ধারণ করেছে জিয়াউর রহমানকে, বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে। ইনশাল্লাহ, জীবন্ত ইতিহাস তারেক রহমান… আমাদেরকে আলোকিত বাংলাদেশে দিকে তিনি নিয়ে যাবেন এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।
সুদূর প্রবাসে থেকে দলকে সংগঠিত করে এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
‘তারেক রহমানসহ জিয়াউর রহমানের পরিবারের ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা পরিবারের ওপরে কী পরিমাণ অত্যাচার-নির্যাতন হতে পারে, একটা ইয়ং সম্ভাবনাময় নেতা তার ওপরে কিভাবে নির্যাতন হতে পারে, তা এই জিয়া পরিবারকে এবং তারেক রহমান সাহেবকে না দেখলে আমরা বুঝতে পারবো না। তার (তারেক রহমান) ওপরে নিদারুণ নির্যাতন হয়েছে, শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, মানসিক নির্যাতন হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অথচ দেখেন, এই নেতা তিনি কখনও থেমে যাননি এবং মাথানত করেননি। মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, মিথ্যা মামলায় বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো— তখন বিএনপির নেতৃত্বে কে আসবে এটা অনেকের মনে চিন্তা ছিল। অনেকে ভাবছিলেন যে, আমাদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এই দায়িত্ব নিতে পারবেন কিনা। কিন্তু তিনি তার কাজের মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত পার্টিকে সংগঠিত করে মহান একটা ছাত্র-জনতার বিপ্লব অভ্যুত্থান ঘটাতে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মধ্যে যে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা আছে, তার মধ্যে যে অসাধারণ গণতান্ত্রিক মন আছে, আমরা যারা তার সঙ্গে কাজ করছি, তারা সব সময় বুঝতে পারি
বিপি/কেজে