কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ব্র্যান্ডিং কক্সবাজার’ এর উদ্যোগে পর্যটননগরীতে পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে কাল থেকে (পহেলা জুলাই) বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা পৌঁছে দেয়া হবে।
ব্র্যান্ডিং কক্সবাজারের প্রতিষ্ঠাতা তরুণ যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয় স্যোশাল মিডিয়ায় এ ঘোষণা দেন।
প্রথমবারের মতো বিনামূল্যে এই অক্সিজেন সেবা রোগীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে কক্সবাজার অক্সিজেন ব্যাংক। পরে সংগঠনটি নগরীর সবকটি ওয়ার্ডে এ সেবা প্রদান করার কথা জানান।
ইশতিয়াক আহমেদ জয় বলেন, ‘জেলায় করোনা পরিস্থিতির প্রতিনিয়ত অবনতি ঘটছে। এ অবস্থায় অক্সিজেনের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি ‘ব্র্যান্ডিং কক্সবাজার’ এর উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ অক্সিজেন ব্যাংক চালু করা হয়েছে। আমরা হাসপাতালের পাশাপাশি রোগীদের অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাই।’
তিনি আরো বলেন, আমরা জানি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সব রোগীর ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় না। করোনায় আক্রান্ত রোগীর একপর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিলে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। শুধু করোনা আক্রান্ত রোগী নয়, অন্যান্য রোগীর জন্যও অক্সিজনের প্রয়োজন হতে পারে’।
জয় বলেন, “এমন অবস্থায় অক্সিজেন মজুত করা এবং এর মূল্য বেশি রাখায় রোগী তাৎক্ষণিকভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্র্যান্ডিং কক্সবাজারের উদ্যোগে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ছয়টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ‘কক্সবাজার অক্সিজেন ব্যাংক’-এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করি।’
অক্সিজেন সেবা পেতে অক্সিজেন ব্যাংক ছয়টি নীতিমালা প্রকাশ করেছে:
১. অক্সিজেন সেবা গ্রহণ করার প্রথম শর্ত হলো চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র। চিকিৎসকের লিখিত পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে না। অক্সিজেন সিলিন্ডার নেওয়ার সময় অবশ্যই রোগীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে আসতে হবে।
২. অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য কতৃপক্ষকে কোনো ফি দিতে হবে না এবং কোনো জামানতও জমা দিতে হবে না।
৩. সীমাবদ্ধতার কারণে কেবল জরুরি প্রয়োজনে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হবে। মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এ উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না, তাই প্রাথমিক সাপোর্টের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অক্সিজেন প্রদান করার পর প্রাথমিকভাবে রোগীর কাছে ২৪ ঘণ্টাই সিলিন্ডারটি থাকবে। এর মধ্যে রোগীর অবস্থার পরিবর্তন না হলে আরও অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে।
৪. কর্তৃপক্ষ সিলিন্ডারসহ সম্পূর্ণ সেট বুঝিয়ে দেবে। স্বেচ্ছাসেবী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরেরা প্রয়োজনে সঠিকভাবে অক্সিজেন দেওয়া এবং ফ্লো-নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে পরামর্শ দিবেন। অথবা, নিজস্ব চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিলিন্ডার লাগানো যেতে পারে।
৫. প্রাথমিকভাবে সেবাটি কক্সবাজার পৌরসভার আওতাধীন ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
৬. ব্যবহারকারী রোগীর ভুলে কোনো দুর্ঘটনা হলে তার দায়ভার কর্তৃপক্ষ নেবে না জানিয়ে একটি অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষর করতে হবে।
বিপি/আর এল