সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় শশুর বাড়ি থেকে হারুন (৩১) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের মায়ের অভিযোগ ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের মাইচ্ছাখালি ব্রিজ এলাকার শ্বশুর বাড়ি পাশের বাগান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত হারুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের নবীগঞ্জ বাজার এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি পেশায় কসাই (মাংস ব্যবসায়ী) ছিলেন।
নিহত হারুনের মা কোহিনুর বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের স্ত্রী বৈশাখী অন্য মানুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে। এ নিয়ে আমার ছেলে হারুন প্রতিবাদ করলে বৈশাখী আমার ছেলের সঙ্গে রাগ-অভিমান করতো। বহুবার আমার ছেলেকে হত্যার হুমকিও দিয়েছে বৈশাখী। আজ সত্যিই বৈশাখীর আশা পূরণ হয়েছে আমার ছেলেকে খুন করে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কোহিনুর বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে কান্না করে ক্যামেরার সামনে এসব কথা বলেন।
হারুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বাবা আবদুল মান্নান, মা কহিনুর বেগম, ভাই রিয়াজ হোসেন ও বোন জোৎস্না বেগম।
হারুনের পরিবারের লোকজন জানায়, প্রায় ৫ মাস আগে পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের মনছুর আহমেদের মেয়ে বৈশাখীর সঙ্গে হারুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পরই জানা যায় বৈশাখীর অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেম রয়েছে। বৈশাখীও নিয়মিত ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতো। এনিয়ে হারুন ও বৈশাখীর মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। এসব কারণে কয়েকদিন আগে বৈশাখী তাদের বাড়িতে চলে যায়।
সোমবার রাতে হারুনকে বৈশাখীর বোনজামাই শ্বশুর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রভাবিত করতে বাড়ির পাশের বাগানে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে। এটি পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন হারুনের পরিবার।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হারুনের শ্বাশুড়ি খুকি বেগম ও স্ত্রী বৈশাখী বেগমকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। হারুনের শ্বশুর মনছুর আহমেদ ও ভায়রাভাই জুয়েল ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের কপালে জখম রয়েছে। শশুর বাড়ির লোকজন জানিয়েছে হারুন নিজেই বরই গাছের সঙ্গে আঘাত করে কপালে জখম করে।
তিনি আরও বলেন, তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে
বিপি>আর এল