১৪ অক্টোবর ২০২৫

বাংলা একাডেমির পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল: সংস্কৃতি উপদেষ্টা

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
বাংলা একাডেমির পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
বাংলাপ্রেস ডেস্ক: সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বললেন, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল। তিনি বলেন, পুরো বাংলা একাডেমিকে ঢেলে সাজানো হবে। রোববার সচিবালয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, যদি কেউ গণবিরোধী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকে এবং সেটা প্রমাণিত হয় তাহলে পুরস্কারের তালিকা থেকে তার নাম বাদ যাবে। সম্প্রতি পুরস্কার ঘোষণা হলে নানা মহল থেকে আলোচনা হয়। এরপর বিষয়টি আমলে নিয়ে তালিকাটি সাময়িক স্থগিত করেছি। তালিকাটি রিভিউ করব। যদি কারও বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড বা ইন্ধনের অভিযোগ প্রমাণিত হয় বা গণবিরোধী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকে বা অপরাধমূলক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তাহলে তার নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে। মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমির জন্য ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি খুব ব্যস্ত সময়। আমরা একটি বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি করতে চাই। যে কমিটিতে বিজ্ঞজনরা সংস্কারের নানা বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেবেন। তিনি বলেন, আমরা প্রক্রিয়ায় ভুল করতে চাইনি, কিন্তু আমাদের ভুল হয়ে গেছে। পুরো প্রক্রিয়াটি মেইনটেইন করতে চেষ্টা করেছি। এ কারণেই আমরা তিন কার্যদিবসের জন্য এগুলো সাময়িক স্থগিত করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আমরা রিভিউ কমিটিতে উঠিয়েছি। কমিটি সেটা বিবেচনা করে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে বাংলা একাডেমির আমূল সংস্কার, ‘ফ্যাসিবাদী’দের অপসারণ এবং পুরস্কার ‘কেলেঙ্কারি’তে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে একাডেমির সামনে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ‘বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ’ ও ‘জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ নামের দুটি প্লাটফর্ম। রোববার দুপুরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর তাদের একটি প্রতিনিধি দল বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঘেরাও কর্মসূচিতে কবি আবিদ আজম বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের পুরস্কার স্থগিত নয়, বাতিল করতে হবে। স্বৈরাচারী সরকারের সময় বাংলা একাডেমিতে অনেক অযোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের বাদ দিতে হবে। পুরস্কারের জুরি বোর্ডে যারা ছিলেন, তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে। তরুণ কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ বলেন, বাংলা একাডেমি নির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠন না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। পুরস্কার স্থগিত করায় যোগ্যদেরও তো অপমান করা হলো। এই দায় পুরস্কারের জুরি বোর্ডকে নিতে হবে। জুরি বোর্ডে যারা আছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, তারা এখন বইমেলার আয়োজন আর পুরস্কার দেওয়ার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মূল কাজ যে গবেষণা, তা নিয়ে কোনো কাজ নেই। আয়োজক জুলাই আন্দোলনের রাজপথের সংগঠন বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজের আহ্বায়ক লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজমের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কবি মাহবুব হাসান, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহীন রেজা, কবি ও অভিনেতা এ বি এম সোহল রশীদ, কবি আবিদ আজম, কবি সৈয়দ রনো, নাট্যকার হুসনী মোবারক, নাগরিক যুব ঐক্যের সভাপতি কবি সাম্য শাহ, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, কবি শাকিল মাহমুদ, কবি মঈন মুনতাসীর, জুলাই আন্দোলনে আহত প্রকাশক মোরশেদ আলম হৃদয় প্রমুখ। বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পরে শনিবার মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সই করা এক নোটিসে এ বছরের পুরস্কারের তালিকা স্থগিত করা হয়। বিপি/টিআই
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন