১৪ অক্টোবর ২০২৫

ফোনে কার কাছে নালিশ দিলেন প্রদীপ-লিয়াকত?

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
ফোনে কার কাছে নালিশ দিলেন প্রদীপ-লিয়াকত?
কক্সবাজার থেকে সংবাদদাতা: মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, র‌্যাব হেফাজতে রিমান্ডে থাকাকালে প্রদীপ ও লিয়াকতকে নির্যাতন করা হয়েছে দাবি করে এক ব্যক্তিকে তারা ‘স্যার’ সম্বোধন করে নালিশ দিচ্ছেন। সেখানে অত্যাচারী হিসেবে তিনজনের নাম উল্লেখ করেছেন প্রদীপ। ভিডিওটি আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওতে প্রদীপ কুমার দাশ বলছেন, ‘ওরা (র‌্যাব) খুব বেশি মাথা গরম করছে, আমাদের ইচ্ছামতো পিটাইছে। ডাক্তারের উপস্থিতিতে কারেন্টের সক দিয়েছে। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কারেন্টের দাগ আছে স্যার। সারাটা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা হ্যান্ডকাফ দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখত। আমাদের পানি দেওয়া, কোনো খাবার দেওয়া একদম বন্ধ। একদম অমানবিক জীবনযাপন স্যার।’ ভিডিওতে আরও দেখা যাচ্ছে, প্রদীপ কুমার দাশ বিষয়টি শক্তভাবে দেখার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছে বিভিন্ন জায়গা থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। ওই মামলাগুলোর তদন্তভার নেবে র‌্যাব। র‌্যাব তদন্তভার নেওয়ার পর তোমাদের আবার এনে শক্ত ব্যবস্থা নেব আমরা। সুতরাং আমরা যা বলি সেভাবে করতে হবে।’ ভিডিওতে প্রদীপ তাদের নির্যাতনে জড়িত হিসেবে র‌্যাবে কর্মরত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। একইভাবে লিয়াকত আলী ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের মারাত্মকভাবে আহত করছে স্যার। আপনারা ডিজি র‌্যাবকে আমাদের ছবিগুলো দিছিলেন মনে হয়। ডিজি স্যার ওইদিন আসছিল। আইসা বলছিল কিছু হবে না। কিন্তু এডিজি র‌্যাব মূলত অত্যাচারটা বেশি করাইছে। এডিজি র‌্যাব আইসা আমাদের বেশি অত্যাচার করছে স্যার।’ তবে ফোনের ওই প্রান্ত থেকে কারও কথা শুনতে পাওয়া যায়নি। ডাক্তারের উপস্থিতিতে ওসি প্রদীপ ইলেকট্রিক সক দেওয়ার অভিযোগ করলেও, কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীন আব্দুর রহমান চৌধুরী আসামিদের সম্পূর্ণ শরীর পরীক্ষা করেও তিনি আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি। ভিডিওটা প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। কক্সবাজারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মুখে মুখে একটাই প্রশ্ন সিনহা রাশেদ হত্যা মামলার মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর মামলার তদন্ত চলাকালে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নিয়ে যেতে প্রদীপের পক্ষে নিয়েছেন কোন স্যার? বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার একজন জানিয়েছেন, সিনহা হত্যা মামলায় রিমান্ড চলাকালে একই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটিয়েছিল বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ। তিনি জানান, কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাশ তার মোবাইলে রিমান্ডে থাকা বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপের ক্ষতস্থানের ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে দেশের বাইরের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে পাঠিয়েছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা রয়েছে বলে জানান তিনি। দুটি অভিযোগই স্বীকার করেছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তিনি জানান, দুটি বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। যারা করেছে নিন্দনীয় কাজ করেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আ জ ম মইনুদ্দিন বলেন, মোবাইলে কথা বলতে গেলে জেল সুপারের অনুমতিক্রমে তার সামনে কথা বলতে হবে। তাও আবার কাস্টোডিয়ান হতে হবে। অর্থাৎ কারাগারে অবস্থানকালীন। কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। বিপি।এসএম
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন