
ফ্যাসিবাদ যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে সে জন্য সজাগ থাকতে হবে : তারেক রহমান

বাংলা প্রেস
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম


সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে নারীদের অবদানের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা মেডেল দেওয়া হয়।প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার, তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ, একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায়, অতীতের মতো দৃঢ়ভাবে আগামী দিনেও আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পরিবার হিসেবে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা যেটা পরিকল্পনা করছি, সামনের দিনগুলোতে সুযোগ এলে প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পরিবারের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করব।ইনশাআল্লাহ আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারীপ্রধানের নামে এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করব। এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে, অন্যদিকে পরিবারগুলোর সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।’
ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে নিজের পরিবারের ভূমিকা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আপনাদেরই মতো আমার মাও (বেগম খালেদা জিয়া) তার এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন। বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছে, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন।
অনেক পরিবারের বন্ধন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু, নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ এসেছে। এই যে সুযোগটি এসেছে আমাদের সামনে, এটাকে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’এ সময় নারীদের উন্নয়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক সংখ্যক মানুষকে (নারী) রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূল ধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারব না, নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভবও নয়। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কখনোই কোনো রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারে না। সে কারণে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি আগামী দিনের সব কর্মপরিকল্পনাগুলোকে সাজিয়েছে বা গ্রহণ করছে।’
তিনি বলেন, “বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সব সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। শুধু নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্ত জরুরি; যদি আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিশেষ করে যদি নারীদের শিক্ষাদানে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা যায়, তাহলে নারীর প্রতি বৈষম্য, অর্থনৈতিক টানাপড়েনকে কেন্দ্র করে পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করা সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির স্লোগান ‘ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি’। এ কারণেই বিএনপির রাজনীতি মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত দক্ষ জনশক্তি তৈরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির।”
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আফরোজা খান রিতা। সঞ্চালনা করেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান।সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় টক শো উপস্থাপক হাসিনা আখতার প্রমুখ।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি>টিডি
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন


রাজনীতি
কোন কোন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাঁদের কণ্ঠ রেকর্ড আছে: জামায়াত নেতা
১১ ঘন্টা আগে
by বাংলা প্রেস



.jpg)