১৪ অক্টোবর ২০২৫

হেফাজত আমির আল্লামা শফী আর নেই

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
হেফাজত আমির আল্লামা শফী আর নেই
বাংলাপ্রেস ডেস্ক: চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। হেফাজত নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী মারা গেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকালে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়। উল্লেখ্য, ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তাকে মজলিসে শূরা সদরে মুহতামিমের পদ দেয়। বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ছাত্রদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে মাদ্রাসার মজলিশে শূরা কমিটি এ সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া তার পুত্র আনাস মাদানীকেও মাদ্রাসা থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় ওই বৈঠকে। আহমদ শফী আলোচনায় আসেন ২০১১ সালে। ওই বছর নারী উন্নয়ন নীতিমালা করার পর এর বিরোধিতা করে চট্টগ্রামে কর্মসূচি ডাকেন তিনি। যদিও ওই আন্দোলনে দৃশ্যত বিক্ষোভ-প্রতিবাদে বেশি কার্যকর ছিলেন ঢাকার আলেমরা। পরে ২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হায়দারের (থাবা বাবা) ব্লগিংকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই বিক্ষোভে নামে কওমি মাদ্রাসার আলেম ও শিক্ষার্থীরা। তবে ঢাকায় জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের আলেমদের অনুপস্থিতিতে পুরো দেশের আলেম সমাজের নেতৃত্বে চলে আসেন আহমদ শফী। সারাদেশে আলোচিত আল্লামা আহমদ শফী ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়াটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বলে জানান হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি জানান, ১০ বছর বয়সে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন তিনি। ১৯৪১ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে চার বছর হাদিস, তাফসির, ফিকাহ শাস্ত্র অধ্যয়ন করে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। ১৯৪৬ সালে দারুল উলুম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান। পরবর্তী সময়ে শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি দারুল উলুম হাটহাজারী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়। তিনিই এর প্রতিষ্ঠাতা আমির মনোনীত হন। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে ১১ এপ্রিল ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে এমএ (আরবি-ইসলামিক স্টাডিজ)-এর সমমান ঘোষণা করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি, নাতনি রয়েছে। আল্লামা আহমদ শফী কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, আল হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের সভাপতি। বিপি।এসএম
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন