বাংলাপ্রেস ডেস্ক: গান করছেন ছোটবেলা থেকেই; পেশাদার সংগীতশিল্পী হয়েছেন বছর ছয়েক আগে। এরই মধ্যে নিজেকে চিনিয়েছেন, পেয়েছেন পরিচিতি ও পুরস্কার। এবার আতিয়া আনিসা উড়াল দিচ্ছেন আমেরিকায়, দুই মাসের সংগীত সফরে। গায়িকার সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম।
গান নিয়ে প্রথম আমেরিকা সফর। কেমন লাগছে?
খুব ভালো। যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি রাজ্যে শো করব। এরপর হয়তো আরো বাড়তে পারে।এটা আমার জীবনের স্বপ্ন ছিল। গান নিয়েই বড় হয়েছি, বরাবরই চেয়েছি গান নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াব। সে স্বপ্নটাই পূরণ হয়েছে। আমার পরিবার, বন্ধু, সতীর্থ— সবাই অনেক খুশি।আয়োজক বদরুর রেজা সাগর ভাইয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ, তিনি আমাকে এমন একটা সুযোগ দিয়েছেন।
ঢাকা থেকে উড়াল দেবেন কবে?
২৬ আগস্ট। প্রথম শো নায়াগ্রা ফলসে হওয়ার কথা, তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এই সফরে তো আসিফ আকবরও যাচ্ছেন...
হ্যাঁ, এটাও একটা ভালো লাগার ব্যাপার। ওনার সঙ্গে একেবারে ছোটবেলা থেকে পরিচয়।পাশাপাশি গ্রামে আমাদের বাড়ি। আমার বাবার সিডি-ক্যাসেটের দোকান ছিল। যখন আসিফ ভাইয়ার ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়, তখন থেকেই আমার বাবার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তিনি আমাদের দোকানে আসতেন, ছোটবেলায় তাঁর কোলেও উঠেছি। বড় হয়ে তাঁর সঙ্গে গানও করেছি। তিনি সব সময় অনেক উৎসাহ দেন, স্নেহ করেন। তাঁর মতো একজনের সঙ্গে সংগীত সফরে যাচ্ছি, এটা ভীষণ আনন্দের ব্যাপার।
আসিফ আকবরকে প্রথম দেখার স্মৃতি মনে আছে?
যত দূর মনে পড়ে, খুব ছোটবেলায় ওনাকে প্রথম দেখেছিলাম। ক্যাসেটের খবরাখবর জানার জন্য তিনি আর তাঁর স্ত্রী এসেছিলেন। তখন আমি পাশের একটি খাবারের দোকানে ছিলাম। কিছুটা দূর থেকেই দেখেছি। পরে তো বিভিন্ন সময়ে বাবার আমন্ত্রণে আসতেন, বহুবার দেখা হয়েছে। ২০১৯-এ তাঁর সঙ্গে প্রথম গান ‘আমি একটা আকাশ কিনতে চাই’ করেছিলাম।
এই সফরের জন্য প্রস্তুতি কেমন?
যেহেতু লম্বা সময় গান নিয়েই থাকতে হবে, তাই নিয়মিত অনুশীলন করছি। আসিফ ভাইয়ার মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছি। আবার নিজেও ঘরে চর্চা করছি। বিভিন্ন ধরনের গানের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, যাতে মানুষের পছন্দ অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারি।
কিছুদিন আগেই নতুন একটি গান এসেছে, সেটি সম্পর্কে বলুন...
গানটির শিরোনাম ‘কী মায়া দিয়েছো’। আহমেদ রিজভী ভাইয়ের কথা ও নাজির মাহমুদ ভাইয়ের সুর। আমি আর ইমরান মাহমুদুল ভাই গেয়েছি। নতুন গান নিয়মিতই থাকে। এরই মধ্যে আমার মৌলিক গানের সংখ্যা ১১৫টি। এখন দুই মাসের সফরে বিদেশে যাচ্ছি, নতুন কিছু গানের রেকর্ডিং সম্পন্ন করে যাচ্ছি। করেছি কিছু প্লেব্যাকও।
সংগীত প্রতিযোগিতা থেকে এসে অনেকে পরিচিতি পায়, আবার হারিয়েও যায়। কারণ কী?
আমি যদি নিজের কাজে লেগে থাকি, সততা ও অধ্যবসায় নিয়ে চেষ্টা অটুট রাখি, তাহলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। উত্থান-পতন থাকবেই, তবে লেগে থাকতে হবে। আমার যখন চার বছর বয়স, তখন থেকে গান করি। অনেক প্রতিযোগিতায় অডিশন দিয়েছি, চেষ্টা করে গিয়েছি। যদিও ভাবিনি গানই আমার পেশা হয়ে উঠবে। সেরা কণ্ঠেও আমি প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় হইনি; মানে বড় কোনো অর্জন নেই। অথচ দেখুন, দুই বছর পর আমি দেশের জাতীয় পুরস্কার পেলাম। কারণ আমি লেগে ছিলাম, হার মানিনি। অনেকে অনেক কথা বলে, বলবে; তবে নিষ্ঠার সঙ্গে লেগে থাকলে স্বপ্নটা পূরণ হবেই। প্রতিযোগিতা থেকে বের হওয়ার পর আমার সতীর্থরা স্টেজ পারফরম্যান্সে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল, আয়ের কথা ভেবে। তবে আমি চেয়েছি নিজের মৌলিক গান করতে। কারণ শিল্পীকে নিজের গান দিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। সে অনুযায়ী মৌলিক গানে মনোযোগ দিয়েছি, ইন্ডাস্ট্রির মানুষরাও সহযোগিতা করেছেন।
ক্যাসেট-সিডির বাজার তো ফুরিয়েছে অনেক আগে। এই সময়ে নবীন শিল্পীদের গান করে জীবিকা নির্বাহ করা কি কঠিন?
আগের কথা তো বলতে পারব না। তবে এখনো গানের অনেক মাধ্যম আছে। বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম এসেছে, নাটকে প্রচুর গান হচ্ছে। আসলে একটা না একটা উপায় বের হয়ই। আর আমি ইতিবাচক চিন্তা করতে ভালোবাসি। তাই গান করে টিকে থাকা কঠিন, এটা মনে করি না। সিডি, ক্যাসেট বলুন আর এই ডিজিটাল সময়, ভালো-মন্দ সময়, ওঠা-নামা থাকবেই; সেটাকে ব্যালান্স করে চলতে হবে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]