
সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: সাধারণ ধারণায় শ্রোতার সম্মুখে কোন কবিতা বা বক্তব্য ইত্যাদি আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে উপস্থাপন করা একটি শিল্প। মূলত বাংলাদেশ, কলকাতা ও জাপানে আবৃত্তিচর্চা হয়ে থাকে।
১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছাত্ররা রাজপথে নেমে ছিল। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল করেছিল, রক্তাক্ত হয়েছিল রাজপথ।সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত শহীদ হয়েছিল।প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি তাইতো আমরা গেয়ে উঠি আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি।
আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারী আমাদের ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই বাংলা ভাষাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা একমাত্র আবৃত্তির মাধ্যমেই সম্ভব। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন দেশের প্রতিটি সংগ্রামে কবিতা ও আবৃত্তিকারদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবৃত্তিকে পছন্দ করেন।কারণ কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ের কাছে সহজে পৌঁছানো যায় ।
এই কবি এবং কবিতা কে রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎসাহিত করবার জন্য বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসবের প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে আবৃত্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। জন্মের সুবর্ণে জাগো সম্প্রীতির স্বরে মুক্তির ডাক দেয় পিতা আজও ঘরে ঘরে -এই প্রতিপাদ্যকে নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে আবৃত্তির তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারী ও ওমিক্রন বৃদ্ধি হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি জেলায় ২৭-২৯ জানুয়ারী ২০২২ সারাদেশে বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব পালিত হবে। এরই ধারাবাহিকতায় লক্ষ্মীপুর জেলায় জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স হলে জেলার তিনটি সংগঠনের আয়োজনে চলে কবিতা আবৃত্তি উৎসব।
আবৃত্তি সংসদ লক্ষীপুর, আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র লক্ষ্মীপুর, আবৃত্তি একাডেমি এই তিনটি সংগঠন লক্ষ্মীপুর জেলায় আবৃত্তি পরিবেশন করেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসবের কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন অনুষ্ঠানে লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন মোঃ আনোয়ার হোসাইন আকন্দ (জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট)। আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ তৌহিদুল ইসলাম (বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ),মেহের নিগার (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিট) , লক্ষ্মীপুর আবৃত্তি সংসদের সভাপতি প্রফেসর মাইন উদ্দিন পাঠান। আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রে লক্ষ্মীপুরেের সভাপতিত্ব করেন কার্তিক সেনগুপ্ত ।
আবৃত্তি পরিবেশন করেন সুলতানা মাসুমা বানু , মাসুম জুলকারনাইন, মাহাতাব উদ্দিন আরজু,আফরিদা তাহসিন রিদিতা , রাফিয়া রেশমা, কাঁকন দেবনাথ, প্রত্যয়, প্রাপ্তি বিশ্বাস, সুভানুর, নেলসি নাথ,লামিয়া কাদের চেলসি নাথ,শান্তনু, তবলায় ছিলেন মোঃ ওমর ফারুক মুরাদসহ আরো অনেকে। বক্তারা বলেন তরুণ সমাজকে আবৃত্তি চর্চার সঙ্গে যুক্ত করা গেলে তারা বিপথে যাবেনা। মাদকাসক্ত থেকে রক্ষা পাবে।
সাহিত্যের অন্যতম মাধ্যম কবিতা। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের ভাষা কবিতা। তারা আরো বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে গানের মতো কবিতারো অনেক অবদান রয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান আবৃত্তি ফটোসেশনের মাধ্যমে আনন্দমুখর ভাবে লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসবের অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।
বিপি/কেজে
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]