
সুলতানা মাসুমা,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের চরশাহীর তিতারকান্দিতে প্রায় দুই দশক আগে যুবদলকর্মী বাবর মিয়াকে হত্যার ঘটনায় জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ জনের মধ্যে সাতজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাই কোর্ট; বাকি চারজন খালাশ পেয়েছেন।
মামলার ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর শুনানির শেষে বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেয়।
আসমিদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তিতারকান্দি গ্রামের মো. আলম, মো. মিরাজ, মঞ্জু মিয়া, মামুন ওরফে সাইফুল ইসলাম মামুম, ভুট্টো ওরফে আবদুস সহিদ, মহিন উদ্দিন এবং পূর্ব রাজাপুরের মঈন উদ্দিনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আর খালাস পেয়েছেন গোবিন্দপুর গ্রামের মোরশেদ আলম, জগন্নাথপুর গ্রামের মাসুদ, মধ্য গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল বাশার এবং তিতারকান্দি গ্রামের কালা মুন্সি।
হাই কোর্টে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, মো. জে আর খান রবিন, শাম্মী আক্তার ও মো. সামসুদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৮ মার্চ রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের তিতারকান্দি গ্রামের যুবদলকর্মী মাওলানা বাবর মিয়াকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। দুদিন পর নিহতের ভাই নূর আলম সদর থানায় ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩০ অগাস্ট লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইদুর রহমান গাজী ১১ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে খালাস দেন।
পরে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স আসে হাই কোর্টে। পাশাপাশি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন আসামিরা। তার ওপর শুনানি শেষে সোমবার রায় দিল হাই কোর্ট।
রায়ের পরে আইনজীবী জে আর খান রবিন সাংবাদিকদের বলেন, “হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল রাতে। মাওলানা বাবরকে হত্যায় আসামিদের উপস্থিতি প্রমাণিত হলেও কে কীভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে তা কোনো সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দিতে স্পষ্ট না। তাছাড়া দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা পরস্পরবিরোধী। সে কারণে আদালত মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন দিয়েছে।”
আর চারজন খালাস পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “নিরপেক্ষ সাক্ষী দিয়ে তাদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দিয়েছে আদালত। মামলার অন্য এক আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই চার আসামির নাম এলেও সাক্ষীদের জবানবন্দি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সমর্থন করেনি। সে কারণে তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিপি/কেজে
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]