১৪ অক্টোবর ২০২৫

নোয়াখালী-৪: একরামের হলফনামায় তথ্য গোপন, স্ত্রীর সম্পদের পাহাড়

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
নোয়াখালী-৪: একরামের হলফনামায় তথ্য গোপন, স্ত্রীর সম্পদের পাহাড়
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর নগদ টাকা কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা নেই। স্ত্রীর নামেও নেই স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কিংবা কোনও টাকা-পয়সা। অথচ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আয়কর রির্টান জমা এবং চার বছর আগে কবিরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার সময়ে ত্াঁর স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলীর হলফনামায় নগদ টাকা ও সম্পদের পাহাড় দেখা গেছে। এবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় স্ত্রীর সেই সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন একরামুল করিম। তবুও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। হলফনামায় দেওয়া এসব তথ্যের কথা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। হলফনামায় একরামুল করিম উল্লেখ করেন, তার আয়ের প্রধান উৎস ব্যবসা। বছরে কৃষিখাত থেকে আয় দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ও অন্যান্য ভাড়া বাবদ পান ২০ লাখ ৩১ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে আয় এক কোটি ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৭ টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা বেতন-ভাতা পান। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে দুই কোটি ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৮ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৮৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল রয়েছে এক কোটি ৩৯ লাখ ৬৩ হাজার ২০২ টাকার। এছাড়া ৯৩ হাজার ৬০০ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, তিন লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, চার লাখ ১৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও তিন কোটি এক লাখ ৪৮ হাজার ৬৮৮ টাকার অন্যান্য সম্পদ রয়েছে তার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে এক কোটি ৩০ লাখ ৫৬ হাজার ২৮০ টাকার কৃষিজমি, ১১ লাখ ২৯ হাজার টাকার অকৃষি জমি, ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৩ হাজার ৩১০ টাকার দালান, ১৩ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ৮৩৫ টাকার বাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে ১১ হাজার টাকার। তবে হলফনামায় একরামুল করিম চৌধুরীর ওপর নির্ভরশীল ও স্ত্রীর নামে কোনও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেননি। তার স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী বর্তমানে কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। কামরুন নাহার শিউলী ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ওঞ-১১এঅ২০২৩ নং আয়কর রির্টানে তাঁর বাৎসরিক আয় উল্লেখ করেছেন ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার ৪১০ টাকা, এরমধ্যে বেতন বাবদ মূল আয় উল্লেখ করেছেন ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মোট সম্পদ উল্লেখ করেছেন ১০ কোটি ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৯০ টাকা, ব্যবসার মুলধন ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬২ টাকা, বিনিয়োগ ৩০ লাখ, হাতে নগদ ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার ৬৩৮ টাকা, ব্যাংক জমা কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭৮ টাকা, অন্যান্য জমা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬০ টাকা, পারিবারিক খরচ দেখিয়েছেন ৭ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৭ টাকা। তিনি ব্যাৎসরিক ট্র্যাক্স প্রদান দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নিজের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছিলেন শিউলি। ২০১৯ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কবিরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুন নাহার শিউলী হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন, তিনি শিপিং এজেন্ট, বার্থ অপারেটর ও ট্রান্সপোর্টের ব্যবসায় জড়িত। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ৯২৮ টাকা। এছাড়া শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/আমানত থেকে বছরে আয় এক লাখ ৩০ হাজার ৭০৩ টাকা, নিজের পেশা থেকে আয় চার লাখ ৮০ হাজার টাকা ও অন্যান্য খাতে আয় ৯ লাখ ৪ হাজার ৬৬ টাকা। নিজের নামে স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তিন কোটি টাকার ওপরে সম্পদ রয়েছে তার। হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদের তথ্য না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে একরামুল করিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এটি দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আমি সাংবাদিককে কেন এই তথ্য দেবো? এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। হলফনামা নির্বাচন কমিশন দেখবে। বিপি/কেজে
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন