১৫ অক্টোবর ২০২৫

রামগতির আস-সালাম মসজিদে “রেকর্ড” সংখ্যক মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
রামগতির আস-সালাম মসজিদে “রেকর্ড” সংখ্যক মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়
সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগতির চোখধাঁধানো আস-সালাম জামে মসজিদটি একবার দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে মুসল্লি ও দর্শনার্থীরা। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রেকর্ড সংখ্যক মুসল্লি এ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটিতে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়তে জেলা সদর, রামগঞ্জ, রায়পুর, কমলনগর উপজেলাসহ নোয়াখালী ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে এসেছে সহস্রাধিক মুসল্লি। এদিকে অপরূপ এ মসজিদের স্মৃতি ধরে রাখতে ডিএসএলআর ক্যামেরা বা মুঠোফোনে ছবি তোলেন অনেকে। নানা ভঙ্গিতে মসজিদের বিভিন্ন কারুকার্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে নিজেকে ক্যামেরায় বন্দি করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন মুসল্লীরা। অন্যান্য ধর্মের লোকজনও মসজিদটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে যাচ্ছেন মাইলের পর মাইল। মসজিদটি আধুনিককালে দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এক স্থাপনা বলে দাবি করছেন দর্শনার্থীরা। মুসল্লিরা জানিয়েছেন, গণমাধ্যম ও ফেসবুকে দেখে মসজিদটি দেখার জন্য কৌতূহল সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে মসজিদে এসে নামাজ পড়ার সুযোগও হয়েছে। মসজিদের প্রতিটি অংশই কারিগর নিপুণ হাতে সাজিয়েছেন। ভেতর থেকে যেমন বাইরে দেখা যায়, তেমনি বাইরে থেকেও ভেতরে নামাজের দৃশ্য চোখে পড়ে। দুটি দরজা থাকলেও একটি জানালাও দেখা যায়নি মসজিদে। এমন স্থাপনা এর আগে চোখে পড়েনি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি বৈদ্যুতিক বাতি ছাড়াই প্রাকৃতিক আলোয় সব সময় উজ্জ্বল ও ফরসা থাকে। বর্ষায় মেলে বৃষ্টির ছোঁয়া। আর এখন শীতে মুসল্লিরা উপভোগ করছেন কুয়াশা ও শীত। পূর্ণিমা রাতে চাঁদের আলো মুগ্ধতা ছড়ায় মসজিদের অন্দরে। দ্বিতল এ মসজিদে কোনো জানালা নেই। মসজিদটি নকশাই এমন চারদিক থেকে কোনো বাধা ছাড়াই আলো-বাতাস প্রবেশ করছে ভেতরে। তবে মুসল্লিদের প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য দুটি দৃষ্টিনন্দন দরজা রয়েছে। গরমে মসজিদকে শীতল রাখতে ভেতরে রয়েছে পানি সংরক্ষণের জন্য চারটি জলাধার। গ্রীষ্মকালে মসজিদকে শীতল রাখবে জলাধারগুলোতে স্থান পাওয়া শীতল পাথরগুলো। মসজিদের খতিব মুফতি হামিদুর রহমান জানান, মসজিদের ভেতরে, নিচে ও দোতলায় প্রায় ৭০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদ চালুর প্রথম জুমায় মাত্র দুই সারি মুসল্লি নিয়ে জামাত করতে হয়েছে। তবে এ জুমায় মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠাতা এ মসজিদের প্রচারণা করতে চাচ্ছেন না। কিন্তু মুসল্লিদের মুখে মুখে মসজিদটির নাম ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ চাইছেন মসজিদটির প্রচার ও প্রসার হোক। এ জন্য এক বছরের মাথার আল্লাহর রহমতে মসজিদের ভেতর ও বাইরে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মুসল্লি।   মসজিদের ইমাম ও মুয়াজিন জানান, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছে ইউনিয়নের শেখের কিল্লা এলাকায় আস-সালাম জামে মসজিদ ও ঈদগাহ সোসাইটি নির্মাণকাজ শুরু হয়। বাংলাদেশি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান আর্কি গ্রাউন্ড লিমিটেডের স্থপতি নবী নেওয়াজ খান শমীন ও তার দল মসজিদটির নকশা তৈরি করে। ১০ হাজার ৮০০ বর্গফুটের দোতলা এ মসজিদের নির্মাণ ব্যয়ভার বহন করেছে রহিমা মমতাজ ও সাইফ সালাহউদ্দিন ট্রাস্ট। বিরতিহীন কাজের পর ২০২১ সালের শেষের দিকে মসজিদটি মুসল্লিদের ইবাদতের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ট্রাস্ট সূত্র জানায়, আস-সালাম জামে মসজিদটি দেশের মধ্যে একটি বিরল স্থাপনা। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ আর জনহিতকর কাজের অংশ হিসেবে ট্রাস্টের এ উদ্যোগ। ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরপরই ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি’ পাওয়ার জন্য মসজিদটির তথ্যচিত্র সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার কনফারেন্সে পাঠানো হয়েছে। বিপি/কেজে
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন