১৪ অক্টোবর ২০২৫

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে অবশেষে ভারতের জয়

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে অবশেষে ভারতের জয়

ক্রীড়া ডেস্ক : শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে হেরে গেল আফগানিস্তান। ভারতকে হারানোর মোক্ষম সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি আফগানরা। তীরে গিয়ে তরী ডুবে আফগানদের। অভিজ্ঞতার অভাবে আবারও হেরে গেল মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানরা। গত বছর এশিয়া কাপেও ভারতের বিপক্ষে জয়ের দুয়ারে গিয়ে হোচট খায় আফগানিস্তান। সেই ম্যাচটি টাই হয়।

শনিবার প্রথমে ব্যাট করে বিরাট কোহলি ও কেদার যাদবের জোড়া ফিফটিতে ভর করে ৮ উইকেটে ২২৪ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত। টার্গেট তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ নবীর ঝড়ো ফিফটির পরও ১১ রানে হেরে যায় আফগানিস্তান। ৪৯.৫ ওভারে ২১৩ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানরা। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২১ রান। ৪৯তম ওভারে যশপ্রিত বুমরাহ মাত্র ৫ রান খরচ করেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে মোহাম্মদ সামির করা প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান মোহাম্মদ নবী। এই বাউন্ডারিতে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তার ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখে আফগানরা। সামির করা ওভারের দ্বিতীয় বলে রান নেয়ার সুযোগ পেয়েও বাউন্ডারি হাঁকানোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন নবী। তৃতীয় বলে পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নবী। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যায়। পরের দুই বলে আফতাব আলম ও মুজিব উর রহমানকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিক করেন সামি।

ভারতের বিপক্ষে ২২৫ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র ২০ রানে ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ২৪ বলে মাত্র ১০ রান করে ফেরেন জাজাই।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। এই জুটিতে তারা ৪৪ রান যোগ করেন। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নাইব। তার আগে ৪২ বলে দুটি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন তিনি। চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা হাসমতউল্লাহ শহীদিকে সঙ্গে নিয়ে ৪২ রানের জুটি গড়েন রহমত শাহ। এরপর শূন্য রানের ব্যবধানে যশপ্রিত ‍বুমরাহর বলে আউট হয়ে ফেরেন রহমত শাহ ও হাসমতউল্লাহ। ৬৩ বলে ৩৬ রান করেন রহমত শাহ। আর ৪৫ বলে ২১ রান করার সুযোগ পান হাসমত। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরানোর আগেই বিপদে পড়ে যান সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান। তিনি যুজবেন্দ্র চাহালের লেগ স্পিনে শিকার হন। এরপর নজিবুল্লাহ জাদরানকে সঙ্গে নিয়ে অবনদ্য ব্যাটিং করে দলকে জয়ের পথেই রাখেন মোহাম্মদ নবী। তাদের এই জুটি ভাঙেন হার্দিক পান্ডিয়া। ২৩ বলে ২১ রান করে ফেরেন নজিবুল্লাহ।

ভারত ২২৪/৮

দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষেই ভারতের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। বিশ্বকাপের তুলনামূলক ছোট দলের বিপক্ষেই রান তুলতে হিমশিম খেয়েছে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত।

বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি আফগানদের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৪ রান করতে সমর্থ হয়।

চলতি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দাপুট দেখিয়ে যাচ্ছে ভারত। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২২৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৬ উইকেটের দাপুটে জয় পায় বিরাট কোহলিরা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী এবং বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের বোলারদের শাসিয়ে ৫ উইকেটে ৩৫২ রান করেছিল ভারত। সেই ম্যাচে ৩৬ রানে জয় পায় ভারত।

নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষেও ব্যাটিং দাপট অব্যাহত রাখে ভারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৩৬ রানের পাহাড় গড়ে ৮৯ রানের বিশাল জয় পায় কোহলিরা।

দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একক আধিপত্য বিস্তার করে নিজেদের অন্যতম ফেবারিট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল ভারত। অথচ শনিবার দুর্বল আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমে খেই হারিয়ে ফেলে ধোনি-কোহলিরা। আফগানিস্তানের মতো উঠতি দলের বোলারদের তুরুপের তাসে পরিণত হয় ১৯৮৩ ও ২০১১ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

শনিবার ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। দলীয় ৭ রানে ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে আফগান স্পিনার মুজিবুর রহমানের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা।

এরপর বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন অন্য ওপেনার লোকেশ রাহুল। দ্বিতীয় উইকেটে তারা ৫৭ রানের জুটি গড়েন। ৫৩ বলে মাত্র ৩০ রান করে মোহাম্মদ নবীর স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে সাজঘরে ফেরেন রাহুল।

তৃতীয় উইকেটে বিজয় শঙ্করকে সঙ্গে নিয়ে ৫৮ রান যোগ করেন বিরাট কোহলি। ৪১ বলে ২৯ রান করতেই রহমত শাহের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন বিজয় শঙ্কর।

এরপর সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারায় ভারত। ৬৩ বলে ৬৭ রান করা বিরাট কোহলিকে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নবী। পঞ্চম উইকেটে কেদার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়েন মহেন্দ্র সিং ধোনি।

টেস্টের আদলে ব্যাটিং করে যাওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ধোনিকে সাজঘরে ফেরান রশিদ খান। তার আগে ৫২ বলে মাত্র ২৮ রান করার সুযোগ পান ধোনি।

ব্যাটসম্যানদের এই যাওয়া-আসার মিছিলে শেষ দিকে একাই লড়াই করে যান কেদার যাদব। তার ৬৮ বলের ৫২ রানে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২২৪ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত। আফগানিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ নবী ও গুলবাদিন নাইব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ৫০ ওভারে ২২৪/৮ (কোহলি ৬৭, কেদার যাদব ৫২, রাহুল ৩০, বিজয় শঙ্কর ২৯, ধোনি ২৮; নবী ২/৩৩, নাইব ২/৫১)।

আফগানিস্তান: ৪৯.৫ ওভারে ২১৩/১০ (মোহাম্মদ নবী ৫২, রহমত শাহ ৩৬, গুলবাদিন নাইব ২৭, রহমত শাহ ২১, নজিবুল্লাহ ২১, রশিদ খান ১৪; সামি ৪/৪০)।

ফল: ভারত ১১ রানে জয়ী।

বিপি।আর এল

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন