মিনারা হেলেন: যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রত্যাশী প্রার্থীর সংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা করছেন বাইডেন প্রশাসন। করোনা মহামারিকালে বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ সংক্রান্ত কার্যকর টাইটেল ৪২ এর মেয়াদ অবসানে গতকাল বুধবার বাইডেন প্রশাসন নাটকীয়ভাবে আশ্রয়প্রত্যাশী প্রার্থীর সংখ্যা সীমিত করার আদেশ জারি করেছেন। ইমিগ্রেশন প্রবক্তারা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে ট্রাম্প যুগের ইমিগ্রেশন নীতিতে ফিরে যাওয়ার দৃষ্টান্ত বলে সমালোচনা করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন ইমিগ্রেশন বিধি কার্যকর হবে বলে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে জানান হয়েছে। ট্রাম্পের সময়ে ইমিগ্রেশন নীতি অনুযায়ী যারা দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে এসাইলামের জন্য আবেদন করতে আগ্রহ প্রকাশ করবে, তাদেরকে প্রথম অন্য একটি দেশে, অর্থ্যাৎ যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত পর্যন্ত পৌছার পূর্বে তারা যেসব দেশ অতিক্রম করেছেন, সেই দেশগুলোর যেকোনো একটিতে এসাইলামের জন্য আবেদন করতে হবে। টাইটেল ৪২ অনুযায়ী কোনো ইমিগ্রান্টকে যুক্তরাষ্ট্রে এসাইলাম চাওয়ার সুযোগ না দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করা যেত।
হোমল্যান্ডি সিকিউরিটির সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন যে, আমরা এসাইলাম সংক্রান্ত একটি নতুন বিধি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছি, যাতে কোনো ব্যক্তি আইনানুগভাবে, নিরাপদে ও সুশৃঙ্খল উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে আগমণে উৎসাহী হয়। এই বিধির আওতায় যারা যুক্তরাষ্ট্রে আইনানুগ বা বৈধভাবে প্রবেশ করবেন না, তারা এসাইলামের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন না এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের আইনানুগ নিরাপত্তার আশ্রয় লাভের যোগ্য বলেও বিবিচিত হবেন না।
তিনি বলেন এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আবেদন করতে পারেন, তাতে তাদের এসাইলামের কঠোর পথ আরো কঠোর প্রমাণিত হবে। বাইডেন প্রশাসনের সর্বশেষ ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচকরা বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিভাসন প্রত্যাসীরা যেসব দেশ অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে এসে উপনীত হন, ওই দেশগুলোর মধ্যে খুব কম সংখ্যকেরই উদার রাজনৈতিক আশ্রয় দান ব্যবস্থা রয়েছে।
বিশেষ করে ল্যাটিন আমেরিকার কোনো কোনো দেশের এসাইলাম অফিসার সংখ্যা এত কম যে তাদের দেশ দিয়ে অতিক্রম করা বিদেশিরা এসাইলাম আবেদন করলেও তারা সামাল দিতে পারবে না। তাছাড়া দেশগুলো আর্থিক সংকটের কারণে বিদেশিদের সাময়িকভাবেও আশ্রয় দেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন নীতিকে সফলতার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করেছিল এবং বাইডেন প্রশাসনের সর্বশেষ নীতিকেও তারা চ্যালেঞ্জ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। সংস্থার ডাইরেক্টর জনথান ব্লেজার এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এসাইলাম প্রার্থনায় আগ্রহী অধিকাংশের আবেদন করার সুযোগকে অবরুদ্ধ করেছেন, যা আমেরিকান জাতির আইন ও মূল্যবোধের পরিপন্থী। বাইডেন তার নির্বাচন প্রতিশ্রতি এভাবে পূরণ করতে গিয়ে ট্রাম্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে যাচ্ছেন। আমরা তা হতে দেব না।
বাইডেন প্রশাসন নতুন ইমিগ্রেশন নীতি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ২৪ হাজার আইন প্রয়োগকারীকে দক্ষিণ সীমান্তে প্রেরণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়া ১১০০ নতুন বর্ডার পেট্টল এজেন্টকেও প্রেরণ করা হচ্ছে।
বিপি।এসএম