Home প্রবাস জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দানবীয় এই সরকারকে সরাতে হবে: গিয়াস আহমেদ

জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দানবীয় এই সরকারকে সরাতে হবে: গিয়াস আহমেদ

by bnbanglapress
A+A-
Reset

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির কেন্দ্রীয় নিবাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। এ জন্য জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সমস্ত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দানবীয় এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কল্যাণমূলক সরকার নিয়ে আসতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। গত সোমবার (৮ মে) নিউ ইয়র্কের উডসাইডের গুলশান টেরেসে ‘আমরা ঢাকাবাসী’র দেওয়া সংবর্ধনার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে জাতি একটা ক্রান্তিকালে উপস্থিত হয়েছে। আগামী নির্বাচনেই পরিস্কার হবে, সিদ্ধান্ত হবে দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না, মানুষের অধিকার থাকবে কি থাকবে না, মানুষ ভোট দিতে পারবে কি পারবে না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না। এ কারণেই আমরা বার বার বলছি সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। গায়ের জোরে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নির্বাচন করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রবীণতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিপন্ন, জনগণের মৌলিক অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি চলছে, উন্নয়নের নামে হরিলুটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশেও তারা একই কাণ্ড করেছিল। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটতরাজ করায় ৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ তৈরী হয়েছিল।
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে তারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। কখনোই তারা পারবে না অর্থনীতিকে মেরামত করতে। বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা। মানুষ সুাবিচার পায় না। যা বিচার হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে দিক-নির্দেশনার ভিত্তিতে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ ধরনের অপকর্মের প্রতিবাদ দূরের কথা নিন্দা জানালেও সরকারের বিশেষ মহলের রোষানলে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশারফ।
বিএনপি নেতা জয়নাল আবদিন ফারুক সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান এবং মিল্টন ভূইয়ার দায়িত্ব হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের আন্দোলনকে প্রবাসে সুসংগঠিত করা। তাহলে বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরা আরো উজ্জীবিত হবেন কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায়ের আন্দোলনে। ‘আমরা ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন এম. বাসেত রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন সোহরাব হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাস, খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ। শুরুতে বিএনপি, জাসাস, যুবদল, ছাত্রদল ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় গিয়াস আহমেদকে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বেবী নাজনীন, চিত্রনায়ক হেলাল খান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ১/১১ পরবর্তী সময়ের তুমুল আন্দোলনের মত এখনও সোচ্চার হতে হবে ‘দেশ বাঁচানোর আন্দোলনে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কল্পে।’ নেতা-কর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত গিয়াস আহমেদ বলেন, সাংগঠনিক নেতৃত্ব নিয়ে মতভেদ দূরে ঠেলে এখন হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘের সামনে দুর্বার আন্দোলন রচনা করতে হবে। অতি সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সামনে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা প্রবাসীরা যে শো-ডাউন দেখিয়েছেন তা অব্যাহত রাখতে হবে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন নূসরাত আহমেদ, জসীম ভূইয়া, ভিপি জসীম, এম এ বাতিন, মাওলানা অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, কাজী আমিনুর রহমান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, আলমগীর কবীর, পারভেজ সাজ্জাদ, হুমায়ূন কবীর, কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, শাহাদৎ হোসেন রাজু, আনিসুর রহমান, জাহাঙ্গির হোসাইন, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, সরোয়ার খান বাবু, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দি প্রমুখ। উল্লেখ্য, গিয়াস আহমেদ ঢাকা দোহার থানা ছাত্রদলের সভাপতি, রমনা থানার ছাত্র দলের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসাবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রে এসে তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলন করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি প্রতিষ্ঠার আগে গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বে ১৯৮৮-এর মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল গঠন করা হয় এবং তিনি প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি গঠনেও তিনি অন্যতম ভুমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রথম আহবায়ক কমিটির তিনি একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন।
ছাত্র রাজনীতি দিয়ে জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে হাতেখড়ি গিয়াস আহমেদের। নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকার দোহার থানা ছাত্রদলের সভাপতি, রমনা থানার ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতির। নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
গিয়াস আহমেদ বাংলাদেশের রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রেও। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। মূলধারার রাজনীতিতেও নিজেকে নিয়ে গেছেন বহু দূর।
তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় বেগম খালেদা জিয়া তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে গিয়াস আহমেদকে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে নিয়োগ দেন, যা এখনো বাতিল করা হয়নি। সবশেষে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান গিয়াস আহমেদকে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য করেন।
গিয়াস আহমেদ ২০০২ নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর হিসাবে নির্বাচন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ২০০৪ সালে তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি সদস্য হিসেবেও নির্বাচন করেন। তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসনাল ককাস গঠনে অগ্রণি ভুমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে তৎকালীন কংগ্রেস সদস্য জোসেফ ক্রাউলি এবং গ্রেগরি মিকসের সাথে বাংলাদেশে গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো ভুমিকা পালন করেন। জাতিসংঘের অর্থায়নে চট্টগ্রামে এশিয়ান উইম্যান ইউনিভার্সিটি গঠনেও গিয়াস আহমেদ গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন.

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী