Home জীবনযাপন দেশে ডেঙ্গু বাড়ার কারণ কী?

দেশে ডেঙ্গু বাড়ার কারণ কী?

by বাংলাপ্রেস ডেস্ক
A+A-
Reset

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: বর্তমানে বাংলাদেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা এরজন্য দায়ী করছেন জলবায়ু পরিবর্তনকে। তারা বলছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং বর্ধিত বর্ষা মৌসুম ভাইরাসজনিত রোগের বাহক এডিস মশার জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করছে।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের মৃত্যুর খবর আসছে।

স্বাস্থ্যঅধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরের ২২ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৬১৬ জন এবং মারা গিয়েছেন ২১ জন। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত এবং মৃত্যু গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

এছাড়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৯৯ জন। এদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৫৪ জন, আর ঢাকার বাইরের এক লাখ ৮৪৫ জন।

২০২৩ সালে দেশের ২৪ বছরের ডেঙ্গুর ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন, আর মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ভারি বৃষ্টিপাতসহ অন্যান্য উপাদানের ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তন এডিস মশার প্রজননের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি করছে। এডিস মশা এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। এর ফলে সারা দেশে মশার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভূমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির (গ্লোবাল ওয়ার্মিং) ফলে সারা বিশ্বে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ও এর গতি প্রকৃতিতে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে; যা আবহাওয়ার ধরণ ও ঋতু বৈচিত্র্য পালটে দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিপদাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত।

বাংলাদেশের পরিবেশ ও জলবায়ুকে ডেঙ্গু সংক্রমনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজননের সঙ্গে বৃষ্টি ও তাপমাত্রার সম্পর্ক রয়েছে।

বাংলাদেশে সাধারণত মে-জুন থেকে বৃষ্টিপাত বাড়তে শুরু করে এবং তাপমাত্রাও বেশি থাকে। ডেঙ্গু সংক্রমণের শুরু থেকে দেখা যায় যে, দেশে বছরের মে-জুন থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং সেটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় আগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বরে।

বৃষ্টি ছাড়াও ঢাকাসহ সারাদেশে প্রচুর নির্মাণ কাজ হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে একনাগাড়ে অনেক দিন পানি আটকে থাকে। সেখানে এডিস মশা প্রতিনিয়তই ডিম ছেড়ে বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে সারা দেশে পুরো বছর মশার বংশ অবাধে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পেয়েছে মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই।

স্বাস্থ্য অধিদফতর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখছে ২০০০ সাল থেকে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ড্যাশবোর্ডে দেখা গেছে, এর মধ্যে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি তিন লাখ ১৬ হাজার ৪৮৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৬৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০২২ সালে এ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০ হাজার ৬৩১ জন, মারা গেছেন ২৮১ জন। আর চলতি বছরে এসে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯৮১ জন, তাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে মারা যায় ১৬৪ জন; পরের বছর সেটা কমে আসে সাতজনে। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে মৃত্যুর এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৫ জনে। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৮১ জন। এরপরে ২০২৩ সালে সব রেকর্ড ভেঙে ডেঙ্গুতে মৃত্যু দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এতে চলতি বছরে ডেঙ্গু সংক্রমণের শঙ্কা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বেড়েছে।

 

বিপি/টিআই

 

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী