বাংলাপ্রেস ডেস্ক: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। জুলাই আন্দোলনবিরোধী দুই শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক দেওয়ার অভিযোগে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় তথ্য উপদেষ্টা এ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য শেষে এক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ রায় এবং কলা অনুষদের ডিন শফিক আশরাফকে সম্মাননা স্মারক দেওয়ার বিরোধিতা করেন।
এ সময় ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘যারা স্বৈরাচারকে সাহায্য করেছে তাদের সম্মাননা স্মারক দেওয়াটা আমরা মানতে পারি না। যাদের আজ সম্মাননা দেওয়া হলো, তাদের একজন আন্দোলনে হামলাকারীদের উসকানিদাতা স্বৈরাচারের দোসর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ রায়। অন্যজন কলা অনুষদের ডিন শফিক আশরাফ আবু সাঈদের মৃত্যুর পর বিতর্কিত কলাম লিখেছেন। তাদের সম্মাননা দেওয়া মানে আবু সাঈদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোতে এখনও স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। তাদের সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার না করলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাঠে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।’
এর পর তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আসলে সরকার গঠনের পরেও একটা কথা বলেছিলাম, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে বাইরে থেকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারাও বলেছেন– আসলে আমাদের অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। প্রয়োজনে দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থান হতে পারে। কারণ আমরা মনে করছি, আসলে ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনও রয়ে গেছে। আমাদের এক দফা দাবি ছিল, সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটানো। সেটি সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে থাকুক না কেন সেটা দেখতে হবে। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য এসেছেন। তার কাছে আমার আবেদন থাকবে, যাতে বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।
‘আপনারা অভিযোগ করলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের আমার সামনে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। একই মঞ্চ থেকে আমাকেও দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আমাকে দেওয়া সম্মাননা আমি গ্রহণ করলাম না। হয়তো কোনও একদিন আসবে, যেদিন ফ্যাসিবাদমুক্ত বেরোবিতে আসবো, শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া পূরণের সক্ষমতা নিয়ে আসবো। সেদিন প্রকৃত সম্মাননা গ্রহণ করবো।’ এরপর সভা মঞ্চ থেকে নেমে আসেন তিনি।
বিপি/কেজে