বাংলাপ্রেস ডেস্ক: শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে কানাডা তদন্ত করার ঘোষণা দেয়ার পর দেশটি থেকে ভারতীয় হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। সোমবার (১৪ অক্টোবর) কানাডার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে সিদ্ধান্তের কথা জানায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর আলজাজিরার।
সোমবার কানাডার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিজ্জর হত্যার তদন্তে ভারতের হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিকদের নাম রাখাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও ভিত্তিহীন বলে তীব্র নিন্দা জানায় দেশটি।
এরপর এক বিবৃতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আমরা বর্তমান কানাডা সরকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা হারিয়েছি। তাই ভারত সরকার হাইকমিশনার ও অন্যান্য টার্গেটকৃত কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তদন্ত তালিকায় তাদের নাম রাখা হয়েছে বলে জানায় কানাডা। বিষয়টি ভারতকে জানানোর পর এই অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবির পাশাপাশি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় নয়াদিল্লি।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার কানাডার কাছ থেকে একটি কূটনৈতিক চ্যানেলে তারা বিষয়টি জানতে পারে। এখন তারা এর জবাব দেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে। তবে ভারত সরকার দৃঢ়ভাবে এই অযৌক্তিক অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।
নিজ্জর নিহত হওয়ার পর ২০২৩ সালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সে দেশের সংসদে ওই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে এই হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি ভারত অস্বীকার করে আসছে।
এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাপক অবনতি হয়। এমনকি ভারত থেকে কানাডার কয়েক ডজন কূটনৈতিককে প্রত্যাহার করতে চাপ দেয় নয়াদিল্লি। এ ছাড়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা সেবা স্থগিত করে দেয় ভারত সরকার।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কানাডার অভিযোগগুলো ট্রুডোর রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ। এ জন্য দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায়। এই সতর্কবার্তা দেয়ার পরই কূটনীতিক প্রত্যাহারের ঘোষণা এলো।
কানাডার সরকারি বার্তায় নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সে দেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মার নাম জোড়া হয়েছে। তবে আজকের বিবৃতিতে সঞ্জয় কুমার ভার্মার পক্ষে সাফাই গেয়েছে ভারত সরকার। বলছে, ভার্মা তার ৩৬ বছরের কর্মজীবন দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি জাপান ও সুদানেও ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এ ছাড়া সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন ইতালি, তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও চীনে। তার বিরুদ্ধে কানাডা সরকার যে অভিযোগ ও অপবাদ দিয়েছে, তা হাস্যকর ও উপেক্ষণীয়।
দিল্লির বিবৃতি ও সিদ্ধান্ত নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কানাডার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিপি/টিআই