বাংলাপ্রেস ডেস্ক: গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘শুধুমাত্র একটা নির্বাচনের জন্য ছাত্র জনতা রাস্তায় নামেনি। শুধু নির্বাচনের জন্য ছাত্ররা প্রাণ দেয়নি। ৫৩ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্যই হাজারো ছাত্র শহীদ হয়েছে। আমরা গণঅধিকার পরিষদ সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন মানি না। রাজনৈতিক দলগুলো ৫৩ বছর সুযোগ পেয়েছে। ড. ইউনুস সাহেবকে ২-১ বছর সময় দিয়ে দেখতে চাই আমরা।’
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগীয় তারুণ্যের গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুর বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতার পর থেকে ৫৩ বছরে দেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে জঞ্জালে পরিণত করেছে। কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকে গণঅভ্যুত্থান হয়নি। মানুষ রাস্তায় নেমেছে ছাত্র জনতার ডাকে। সুতরাং এখন কিছু রাজনৈতিক দল চাইলেই নির্বাচন দিয়ে দিতে হবে, এটা আমরা মানি না। যতোক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ হবে না, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন আসবে না, ততোক্ষণ নির্বাচন দেয়া মানে রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগ হাতছাড়া করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, এই সরকারের ম্যান্ডেট নেই। কিন্তু আমরা বলছি, বিএনপি-জামায়াত-ডান-বাম সকলের ম্যান্ডেটে ল্যান্ডস্লাইড ভিক্ট্রি নিয়ে এই সরকার দায়িত্ব পেয়েছে। এই সরকার চাইলে রাষ্ট্রের কল্যাণে সকল সংস্কার করবে। আমরা তাদের সাথে আছি। কিন্তু আবার ব্ল্যাংক চেকও দিয়ে দিইনি। জনবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আমরা দরকার হলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবো।’
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি করে নুর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের খসড়ায় রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান বাতিলের কথা শুনতে পাচ্ছি। এটার কারণ হচ্ছে, কিছু রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জন্য সিম্প্যাথি দেখাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আমরা প্রয়োজনে গণআন্দোলন গড়ে তুলবো। দরকার হলে চট্টগ্রাম থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা হবে।’
সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। কিন্তু দেশকে লুটপাট করে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। যারা লুটপাট করে দেশ ধ্বংস করে গেছে তাদের আর রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আর এই ঐক্যের জন্য জাতীয় সরকারের বিকল্প নেই। সরকার যদি আমাদের সাথে থাকে, আমরাও আছি। কিন্তু আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে আমরা তাদের সাথে নেই।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কামরুন্নাহার ডলি, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ, চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর গণ-ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বিপি/টিআই