আবু সাবেত: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত এটিভির ষষ্ঠ ‘আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস পুরুস্কার’ পেলেন ৩৪ ভাগ্যবান শিল্পী, কলাকুশলী ও ব্যবসায়ী। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ নভেম্বর) নিউ ইয়র্কের লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলের মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও ভারতের বিনোদন জগতের সেরা তারকা শিল্পী, কলাকুশলী ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিততে আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস পুরুস্কার ঘোষণা করেন আয়োজকবৃন্দ। এসময় হলভর্তি দর্শকশ্রোতা করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করেন। নিউ ইয়র্কে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানটি প্রবাসীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে জানান আয়োজবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আশা টেলিভিশন (এটিভি, ইউএসএ)-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমান বলেন, শুধু নিউ ইয়র্কেই নয়, আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস পুরুস্কারের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বব্যাপী। এ অনুষ্ঠানটি একদিন একটি আন্তর্জাতিকমানের সেরা অনুষ্ঠানে পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিউ ইয়র্কের বিনোদনমুলক অনুষ্ঠানগুলোতে কোন নতুনত্ব দেখা যায় না। প্রবাসীরা এসব নিম্নমানের অনুষ্ঠান দেখে বিরক্ত প্রায়। তাই একগুয়েমিতা বেরিয়ে প্রবাসী দর্শকশ্রোতাদের জন্য আশা টেলিভিশন (এটিভি, ইউএসএ)-এর এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করে নতুন মাত্রার বিনোদন প্রদানের চেষ্টা করেছি মাত্র। অনুষ্ঠানটি প্রবাসী বিনোদন প্রিয় মানুষদের ভালো লেগেছে। আগামী বছর দুবাইতে সপ্তম আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস পুরুস্কার অনুষ্ঠান হবে বলে জানান তিনি।
আশা গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান এশা রহমান বলেন, শিল্পীরা যখন কোন পুরুস্কার পান তাদের মতো তিনিও আনন্দিত হয়ে উথেন। বিশেষ করে যদি কোন নারী হয়ে থাকেন। কারণ তিনি সব সময় নারীদের পাশে থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করতে চান তিনি।
তিনি বলেন, একজন নারী তখনই সাফল্যতা অর্জন করতে পারেন যখন তার স্বামী সেই নারীকে সর্বাত্মক সাহায্য করেন। তিনি তার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমা্নের উদাহরণ দিয়ে বলেন এমন একজন মানুষ পাশে থাকলে যে কোন নারী উপরে ওঠা সহজ হয়ে যায়। তিনি তার হাত ধরে অনেকদুর এগিয়ে যেতে চান।
অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার মডেল ও চলচ্চিত্র প্রযোজক পিয়াল হোসেন বলেন, নিউ ইয়র্কে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ‘আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠান সর্বাত্মক সফল হয়েছে। হলভর্তি দর্শকশ্রোতা দেখে খুবই আন্দন্দিত তিনি। প্রবাসীদের এমন সাড়া পাওয়া যাবে সেটা আগে কখনই আশা করেননি তিনি। অনুষ্ঠানে আগত সকল দর্শকশ্রোতাসহ নেপথ্যের সকল কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
নিউ ইয়র্কের কমিউনিটি বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও প্রবাসী ব্যবাসায়ী ফাহাদ সোলায়মান বলেন, নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এ ধরনের অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীতা রয়েছে। এতদিন বিনোদনের নামে সচরাচর আমারা যে ধরনের অনুষ্ঠান দেখে আসছি নিঃসন্দেহে এটি একটি সম্পুর্ণ ব্যতিক্রম অনুষ্ঠান। শিল্পী, কলাকুশলী ও ব্যবসায়ীদের স্ব স্ব কাজে উৎসাহিত করার জন্য এরকম আরো অনুষ্ঠান করা দরকার বলেন মনে করেন তিনি। তিনি এ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
হাসানুজ্জামান সাকীর পরিচালনায় এবং দেবাশীষ বিশ্বাস, শারমিনা শিরাজ সোনিয়া ও সাদিয়া খন্দকারের যৌথ সঞ্চালনায় এবারে এটিভি’র ষষ্ঠ ‘আইকনিক স্টার অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস’ পেয়েছেন ৩৪ জন ভাগ্যবান শিল্পী, কলাকুশলী ও ব্যবসায়ী। এরা হলেন অভিনয়শিল্পী পায়েল সরকার, বিদ্যা সিনহা মিম, তানজিন তিশা, সাদিয়া জাহান প্রভা, মামনুন হাসান ইমন, নিরব হোসেন, আবদুন নূর সজল, বিপ্লব, সামিনা চৌধুরী, আঁখি আলমগীর, ফবাশির তেজি খান, স্বপ্নীল সজিব, নাজু আখন্দ, এশা রহমান, মিস্টি জান্নাত, মন্দিরা চক্রবর্তী, মিলা হোসেন, নিবির আদনান নাহিদ, রেশমি মির্জা, তানভীর তারেক, শার্মিলা মাইতি, দেবাশীষ বিশ্বাস, শারমিনা শিরাজ সোনিয়া, সাদিয়া খন্দকার, মোঃ মনির হোসেন যুবরাজ, জারিন তাসনিম, এম এ ওয়াহিদ, আমজাদ হোসেন, গৌতম সাহা, মোঃ শাহাদাত হোসেন সুমন, ওয়ালী সুজন, শামীম হোসেন, নানজিবা খান ও হিমেল আশরাফ।
শিল্পী, কলাকুশলী ও ব্যবসায়ীদের হাতে পুরুস্কার তুলে দেন অতিথি আহমদ শরীফ, কাজী মারুফ, সামিনা চৌধুরী, শিরিন বকুল, আকাশ রহমান, ফাহাদ সোলায়মান, রাসেক মালিক, আফতাব বিন তমিজ, লিটন আহমেদ, এশা রহমান ও পিয়াল হোসেন, আজাজ খান স্বপন, মোঃ খলিলুর রহমান ও বেলাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন যথাক্রমে-সামিনা চৌধুরী, শামীম হোসেন, রেশমি মির্জা, ইমন নিরব, পায়েল, নাজু আখন্দ, ফাবাশির তেজি খান, স্বপ্নীল সজিব, মিস্টি জান্নাত, নাহিদ, জারিন, সামিয়া, নাইরিতা, আলভান ও শাগনিক।
ফ্যাশন শোতে যারা অংশ নিয়েছেন তারা হলেন-বিদ্যা সিনহা মিম, তানজিন তিসা, জারিন, সজল, নিবির, মেরি ও আকাশ রহমান। কোরিওগ্রাফার: শাহাদাত হোসেন সুমন ও গৌতম সাহা। ডিজাইনার: নুসরাত আয়েশা ও প্রিন্স মাহমুদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত ও দেশের গান পরিবেশনের বদলে হিন্দি গানের সাথে নৃত্য পরিবেশন দেখে হতাশ হয়েছেন অনেক দর্শক।
অনুষ্ঠানে প্রমোশনাল পার্টনার ছিলেন শুভদীপ ঘোষ (লাইভটিউনিন, ভারত), সহযোগী পার্টনার তানভীর আহমেদ (সিইও, রং ইন্টারন্যাশনাল, মন্ট্রিয়ল কানাডা), ফুড পার্টনার মেহেদী হাসান (প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও, বাংলা কড়াই, নিউ ইয়র্ক), ফুড পার্টনার নুর এম. মুয়ীদ টিপু, সিইও, ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁ, জ্যামাইকা, নিউ ইয়র্ক। সাউন্ডস অ্যান্ড লাইটস: সায়েম, সাউন্ড গিয়ার, নিউ ইয়র্ক এবং অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার ছিলেন: নেহার সিদ্দিকী, নিউ ইয়র্ক।
বিপি।এসএম